কাজ বন্ধ জেকে-নগর কোলিয়ারিতে। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ
তোলাবাজির অভিযোগে এক সপ্তাহ আগেই সাসপেন্ড করা হয়েছিল তৃণমূল সমর্থক এক খনিকর্মীকে। সেই সাজা তুলে নেওয়ার দাবিতে শনিবার রানিগঞ্জের জেকে নগর কোলিয়ারি অচল করে দিল তৃণমূল। চাপের মুখে সাসপেনশন তুলে নিতে বাধ্যও হলেন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।
আসানসোল খনি ও শিল্পাঞ্চলে শাসকদলের দাদাগিরি কোনও নতুন ঘটনা নয়। এর আগে দুই যুবনেতার বিরুদ্ধে জামুড়িয়ায় শ্যাম স্টিল কর্তৃপক্ষকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। জেকে নগর কোলিয়ারিতে এক আইএনটিটিইউসি নেতার বিরুদ্ধে আধিকারিককে নিগ্রহের অভিযোগও ছিল। যার জেরে খনি বন্ধের নোটিসও দিয়েছিলেন কর্তারা। এ রকম নজির আরও অনেক রয়েছে।
এ বারের ঘটনার সূত্রপাত গত ১৪ ফেব্রুয়ারি। ইসিএল সূত্রের খবর, তৃণমূল সমর্থিত কয়লা খাদান শ্রমিক কংগ্রেসের (কেকেএসসি) সদস্য রাজু সিংহ খনির এক নিরাপত্তারক্ষীর কাছ থেকে নিয়মিত মোটা টাকা দাবি করতেন এবং তিনি তা দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বিষয়টি জেনে কোলিয়ারি এজেন্ট রাজুকে সাসপেন্ড করে দেন। এজেন্ট এস কুমারের দাবি, “প্রকাশ্যে অন্য দাবি নিয়ে এলেও আসলে ঘুরপথে চাপ তৈরি করে সাসপেনশন তোলানোই ছিল এ দিনের বিক্ষোভের আসল উদ্দেশ্য।
এ দিন স্থানীয় তৃণমূলের স্থানীয় নেতা অজিত মাহাতোর নেতৃত্বে শ’দুয়েক কর্মী-সমর্থক সকাল ৭টা থেকে দুপুর প্রায় ১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের প্রকাশ্য বক্তব্য, খনি থেকে গ্রামে জল সরবারহের পাম্পটি দীর্ঘদিন বিকল। জেকে নগরের প্রধান রাস্তাও বেহাল। মাস দুয়েক আগে কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষের তরফে সুরাহার আশ্বাস দেওয়া হলেও তা করা হয়নি। অথচ পরে রাজু সিংহের সাসপেনশন তুলে নেওয়া হলে তাঁরা নিরস্ত হয়ে কোলিয়ারি ছেড়ে চলে যান। ইসিএলের সিএমডি-এর কারিগরী সচিব নিলাদ্রী রায় বলেন, “উৎপাদন বন্ধের জেরে এ দিন প্রায় লাখ তিনেক টাকা ক্ষতি হয়েছে। ভবিষ্যতে এই রকম পরিস্থিতিতে এড়াতে প্রশাসনের সাহায্য চেয়েছি।” তৃণমূলের বর্ধমান জেলা কার্যকরী সভাপতি ভি শিবদাসন পাল্টা বলেন, “কোলিয়ারির এজেন্ট কর্মীদের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করেন। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানিয়েছি।”