তিন মাসেও ফল বেরোয়নি, বিপাকে পড়ুয়ারা

পরীক্ষার তিন মাসের মধ্যেই ফল বেরোনোর কথা, অথচ সময় পেরোনোর পরেও প্রকাশিত হয়নি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ট-৩ বিএ, বিএসসি ও বিকম অনার্সের ফল। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, ফল দেরিতে বেরোলে অন্যত্র ভর্তির সুযোগ পাবেন না তাঁরা। তাঁদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেও ফলপ্রকাশ কবে হবে তার কোনও সন্তোষজনক উত্তর মিলছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৪ ০০:৪২
Share:

পরীক্ষার তিন মাসের মধ্যেই ফল বেরোনোর কথা, অথচ সময় পেরোনোর পরেও প্রকাশিত হয়নি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ট-৩ বিএ, বিএসসি ও বিকম অনার্সের ফল। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, ফল দেরিতে বেরোলে অন্যত্র ভর্তির সুযোগ পাবেন না তাঁরা। তাঁদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেও ফলপ্রকাশ কবে হবে তার কোনও সন্তোষজনক উত্তর মিলছে না।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে দেখা গেল শ্যামসুন্দর কলেজের এক ছাত্রকে। এ বছর গণিত অনার্সে পার্ট ৩ পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ছাত্রের অভিযোগ, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বিভাগ থেকে আমাদের বলা হচ্ছে উপাচার্যের কাছে গিয়ে ফলপ্রকাশের দিন জানতে। অথচ উপাচার্যের ঘরেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কোনও কথাও শোনা হচ্ছে না।” তাঁর দাবি, “আমরা কিছু বলতে গেলেই গেটে তালা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রেজিস্ট্রারের ঘরে ঢুকতে গিয়েও শুনছি তিনি বৈঠকে ব্যস্ত। তাহলে আমাদের সমস্যার কথা কে শুনবে?”

পড়ুয়ারা জানালেন তাঁদের অনেকেই ভিন রাজ্যে লেখাপড়া করতে যেতে চান। কারণ এখনও রাজ্যের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএ, এমএসসি বা এমকমের ফর্ম দেওয়া শুরু হয়নি। ফলে ফর্ম দেওয়া শুরু হয়ে গেলে তাঁরা সুযোগ পাবেন কি না সেই অনিশ্চয়তায় পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ বিলাসপুর, ছত্তিশগড় বা দিল্লিতে স্নাতকোত্তর পাঠক্রমে ভর্তি হয়ে যেতে চাইছেন। কিন্তু সেই গুরু ঘাঁসিদাস বিশ্ববিদ্যালয় বা জওহরলাল নেহরু বিশ্বদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরের ফর্ম তুলতে গেলেই পার্ট ৩ পরীক্ষার মার্কশিট দেখাতে বলা হচ্ছে। কিন্তু মার্কশিট হাতে না পাওয়ায় ফর্ম তুলতে পারছেন না তাঁরা। আবার ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ফর্ম দেওয়া শেষও হয়ে যাবে। এ পরিস্থিতিতে বিএ, বিএসসি, বিকমের অনার্স পরীক্ষার্থীরা পড়েছেন চরম বিপাকে।

Advertisement

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সভাপতি খোন্দকার আমিরুল ইসলামের কথায়, “প্রতিদিনই ছাত্রছাত্রীরা আমাদের কাছে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আধিকারিকই তাঁদের সমস্যার কথা শুনছেন না। আমরা পরীক্ষা নিয়ামক আবসোস আলি শেখকে বলেছি, দু’একদিনের মধ্যে হয় ফলপ্রকাশ করে মার্কশিট পরীক্ষার্থীদের হাতে দিতে হবে, নয়তো বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই সমস্যা সমাধান করতে হবে।” দ্রুত রেজাল্টের সমস্যা না মিটলে আন্দোলনে নামার কথাও বলেন তিনি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার ইতিমধ্যেই রেজিস্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যাায় ও পরীক্ষা নিয়ামককে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকে ওই ছাত্রছাত্রীরা ফর্ম নিতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে। কিন্তু পরীক্ষার্থীদের দাবি, তাঁরা খবর পেয়েছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে কোনও যোগাযোগই করা হয়নি। পরীক্ষা নিয়ামক আবসোস আলি বলেন, “পার্ট ৩ অনার্স পরীক্ষার ফলপ্রকাশে এখনও দেরি রয়েছে। যুদ্ধকালীন তত্‌পরতায় খাতা দেখা হলেও, অনেক পরীক্ষক এখনও খাতা জমা দিয়েই উঠতে পারেননি। তবে উপাচার্যের নির্দেশ মতো আমরা চেষ্টা করছি প্রভিশন্যাল শংসাপত্রের মত কিছু একটা দিয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে জানাতে, যে এই পরীক্ষার্থীরা পার্ট ২ পরীক্ষা পাশ করে পার্ট ৩ পরীক্ষা দিয়েছেন। ওঁদের ফর্ম দিতে অসুবিধা নেই। ভর্তির সময় তাঁরা মার্কশিট অবশ্যই জমা দেবেন।”

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ মুহূর্তের এই প্রচেষ্টা কতটা সুরাহা হবে তা নিয়ে সংশয়ে ছাত্রছাত্রীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন