আহত রেজাউল। —নিজস্ব চিত্র।
জমি নিয়ে বিবাদের জেরে থানায় দাঁড়িয়েই কীটনাশক খেলেন এক যুবক। মঙ্গলবার খণ্ডঘোষ থানার ঘটনা। শেখ রেজাউল নামে ওই যুবক আপাতত বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
রেজাউলের দুই আত্মীয় শেখ আলম ও শেখ রফিক জানান, মসজিদের মালিকানাধীন আড়াই বিঘে জমি চাষ করত রেজাউল। কিন্তু এলাকার শেখ পিন্টু ও শেখ শান্তি নামে দুই তৃণমূল কর্মী তাঁকে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে রেজাউল বেশ কয়েকবার থানায় জানাতে গেলেও পুলিশ সাহায্য করে নি বলে তাঁদের দাবি। রবিবার সকালেও পিন্টু ও শান্তি রেজাউলকে চাষে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। তারপরেই থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রেজাউল। পরে মঙ্গলবার সকালে খণ্ডঘোষ থানার ওসি বক্তিয়ার শেখ বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে রেজাউলকে ডেকে পাঠান। সেখানে ওই দুই তৃণমূল কর্মী পুলিশের সামনে রেজাউলকে অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেন বলে অভিযোগ। রাজি না হওয়ায় তাঁরা তাঁকে মারধরও করেন। এরপরেই ওসির ঘর থেকে বেরিয়ে মানসিক অবসাদে থানার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রেজাউল কীটনাশক পান করেন বলে অভিযোগ।
তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুুপার তরুণ হালদার জানান, ওই জমিটি যেহেতু মসজিদের সম্পত্তি, তাই কাকে চাষ করতে দেওয়া হবে তা মসজিদ কমিটিই ঠিক করে। রেজাউল ওখানে তিন বছর ধরে চাষ করছেন। তার আগে অন্য একজন ১৫ বছর চাষ করেছেন। মসজিদ থেকেই রেজাউলকে জানানো হয় এ বার জমি অন্য কাউকে চাষ করতে দেওয়া হবে। এরপরেই রেজাউল থানায় আসেন। তাঁকে জানানো হয়, পুলিশ এ বিষয়ে কিছু করতে পারবে না। হয় গ্রামের ফাইভম্যান কমিটির কাছে যান, নাহলে মসজিদ কমিটির কাছে গিয়ে জানান। তারপরেই হতাশায় কীটনাশক খেতে উদ্যত হন রেজাউল। অতিরিক্ত পুলিশ সুুপারের দাবি, “তাঁকে কীটনাশক খেতে দেখে হৈ চৈ করে ছুটে এসে ধাক্কা মারে পুলিশ। রেজাউলের মাথায় চোট লাগলে তাঁকে প্রাণে বাঁচাতেই গিয়েই হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এসডিপিও অম্লানকুসাম ঘোষকে ঘটনাস্থলে গিয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।” তৃণমূলের জেলার অন্যতম পর্যবেক্ষক, রাজ্য নেতা অলোক দাস বলেন, “থানার মধ্যে এক ব্যক্তি বিষ খেয়েছেন শুনেছি। তবে তাকে তৃণমূলেরই কোনও গোষ্ঠী ওই জমিতে চাষ করতে বাধা দিচ্ছিল এমন খবর পাইনি। খোঁজ নিচ্ছি।”