সভায় প্রার্থীর সঙ্গে মুকুল রায়। —নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচনী প্রচারে এসে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা কার্যত স্বীকার করে নিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়।
বুধবার কালনা শহরের অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামে নির্বাচনী জনসভায় স্থানীয় নেতাদের নাম ধরে ধরে মুকুলবাবু বলেন, “লোকসভায় না জেতার কারণ নেই। তবে কখনও উদয়, কখনও মদন, কখনও অশোক, কখনও অঞ্জন আলাদা আলাদা মিছিলে হাঁটছে। লোকে বলছে, এটা হচ্ছেটা কী?” সভার মাঝেই তিনি আবারও বলেন, “মদন কোথায়, বিশ্বজিৎ কোথায়, উমা কোথায় নির্বাচনে কালনার মানুষ এটা দেখতে চাইছেন না।” মুকুলবাবুর দাবি, ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনে ৪৯ হাজার ভোটে জিতেছিল সিপিএম। যার মধ্যে ৩৯ হাজার ব্যবধানে জেতে রায়না বিধানসভা থেকে। এ বার সবাই যদি ঠিকঠাক নিজের জায়গাটাকে দেখে নিতে পারে তাহলে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান লক্ষাধিক হয়ে যেতে পারে।
কালনা শহরে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের বিষয়টি এমনিতেই বেশ পুরনো। নিন্দুকেরা বলে, শহরে যত নেতা রয়েছেন তার থেকে বেশি আছে পার্টি অফিস। লোকসভা ভোটের আগে ওই দ্বন্দ্ব আরও প্রকাশ পায়। বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুনীল মণ্ডলের হয়ে প্রত্যেক গোষ্ঠী আলাদা দেওয়াল লিখন তো করেই, শহরে আলাদা আলাদা মিছিলও করে। এ দিন মুকুলবাবু অভিযোগ করেন, কন্যাশ্রী, গীতাঞ্জলি, মহিলাদের কর্মসংস্থান, পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর মতো বিষয়গুলি পরিকল্পনা করে প্রচারে আনা হচ্ছে না। দলীয় নেতা কর্মীদের সরকারের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম বেশি করে প্রচারের নির্দেশ দেন তিনি।
কালনায় মিঠুন-মুকুলের সভায় ভিড়। ছবি: মধুমিতা মজুমদার।
মুকুলের সঙ্গে এ দিন ছিলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তী। বিকেল ৩টেয় সভা শুরুর কথা থাকলেও হেলিকপ্টার পৌঁছয় প্রায় ৫টায়। দুপুর ২টো থেকে কড়া রোদ উপেক্ষা করে মিঠুনকে দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। মিঠুনও ১৩ মিনিটে কখনও ভোট দেওয়ার আবেদন, কখনও সংলাপ আওড়ে সভা জমিয়ে দেন। তিনি বলেন, “ফাটাকেষ্ট খবর দেখে না, পড়ে না, শোনে না, শুধু খবর তৈরি করে।” আর প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়ে বলেন, “এ বার সুনীলদা কে আপনারা চান্স দিন। পাঁচ বছরে কাজ না করলে ভাববেন। তবে সুনীলদা কাজ না করে কোথায় যাবেন? ওর পিছনে দিদির, মুকুলদার ক্যামেরা থাকবে।”