আসানসোলের পরে দুর্গাপুরের জন্যও এ বার পৃথক মহিলা থানা গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, রাজ্যের স্বরাস্ট্র দফতর দুর্গাপুরে মহিলা থানা গড়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। তবে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের কাছে লিখিত নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়নি এখনও। কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দুর্গাপুরের কোথায় মহিলা থানাটি গড়ে উঠবে তা এখনও ঠিক হয়নি, তবে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। শুধু দুর্গাপুর শহর নয়, কমিশনারেটের অন্তর্গত দুর্গাপুর মহকুমার গ্রামীণ এলাকাও ওই থানার আওতায় থাকবে। স্বরাস্ট্র দফতর থেকে নির্দেশিকা এসে গেলেই থানা চালু করার প্রক্রিয়া সেরে ফেলা হবে বলেও তাঁর দাবি।
২০১১ সালের ১ সেপ্টেম্বর কাজ শুরু করে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট। তারপরে মহিলাদের উপর অত্যাচার, অপরাধ কমাতে এবং সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে আসানসোলে মহিলা থানা গড়ার উদ্যোগ করা হয়। শেষ পর্যন্ত ২০১২ সালের জানুয়ারিতে রাজ্যের প্রথম মহিলা থানা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে আসানসোল মহিলা থানা। তত্কালীন আইন মন্ত্রী তথা আসানসোলের বিধায়ক মলয় ঘটক থানার উদ্বোধন করেন। সারা দেশে মহিলা থানা চালু করার নিরিখে দ্বিতীয় স্থান পায় এ রাজ্য। পরে অবশ্য আরও ১৯টি মহিলা থানা গড়ে উঠেছে এ রাজ্যে। এ বার সেই তালিকায় নাম উঠতে চলেছে দুর্গাপুরেরও।
আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এক আধিকারিকের দাবি, কমিশনারেটের তরফ থেকেই রাজ্য সরকারের কাছে দুর্গাপুরে মহিলা থানা গড়ার প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি রাজ্যের স্বরাস্ট্র দফতর আরও ১০টি মহিলা থানা খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মধ্যেই রয়েছে দুর্গাপুর। তবে স্বরাস্ট্র দফতর থেকে এখনও লিখিত কোনও নির্দেশিকা কমিশনারেটের কাছে আসেনি। কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের কোথায় নতুন থানাটি গড়ে উঠবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুর্গাপুরে বর্তমানে তিনটি থানা রয়েছে। দুর্গাপুর থানা শহরের এ জোনে, নিউটাউনশিপ থানা এমএএমসি এলাকায় এবং কোকওভেন থানা স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে। বিধাননগর এলাকায় কোনও থানা নেই। সে কথা মাথায় রেখে মহিলা থানার কার্যালয় বিধাননগরে করা যায় কি না সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে বলেও জানিয়েছেন কমিশনারেটের ওই আধিকারিক।
আক্রান্ত মহিলারা যাতে নিজেদের সমস্যা, অভিযোগের কথা খোলাখুলি জানাতে পারেন সে কথা মাথায় রেখে মহিলা থানার সব পুলিশকর্মীই মহিলা। থানা খোলার কথা শুনে দুর্গাপুর মহিলা কলেজের এক ছাত্রী শ্বেতা ভৌমিক বলেন, “যতই আধুনিক হই, ছেলেদের কাছে এখনও খোলামেলা সব বিষয় জানানোটা অনেকের পক্ষেই বেশ মুশকিল। মহিলা থানা চালু হলে সেই সমস্যা দ্রুত মিটবে বলে আশা করা যায়।”
শিক্ষিকা সমাদৃতা রায়ও বলেন, “শুধু মহিলাদের জন্য থানা গড়ে উঠলে মহিলাদের অভিযোগ অনেক বেশি গুরুত্ব পাবে।” একই মত শহরের এ জোনের বাসিন্দা পূর্ণিমা সমাদ্দারেরও। ওই বধূ বলেন, “আশা করা যায়, মহিলাদের উপর ক্রমবর্ধমান নির্যাতন রোধে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেবে মহিলা থানা।”