দুর্গাপুরে ফের চুরি দুই বাড়িতে ভরসন্ধ্যায় বারবার লুঠ, পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ

দামী জিনিসপত্র তো বটেই। বাসনপত্র থেকে চাল, ডাল, তেল, নুন, মাংসও নিয়ে গেল চোরেরা। ডিপিএল টাউনশিপে সংস্থার দুই আধিকারিকের বাড়িতে এমনই লুঠপাট চলল শনিবার ভরসন্ধ্যায়। কোকওভেন থানা এলাকায় ফের এমন চুরির ঘটনায় আতঙ্কে বাসিন্দারা। বারবার এমন ঘটলেও পুলিশ নিষ্ক্রিয়, এই অভিযোগে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০১
Share:

ডিপিএল কলোনিতে চুরির পরে তদন্ত।—নিজস্ব চিত্র।

দামী জিনিসপত্র তো বটেই। বাসনপত্র থেকে চাল, ডাল, তেল, নুন, মাংসও নিয়ে গেল চোরেরা। ডিপিএল টাউনশিপে সংস্থার দুই আধিকারিকের বাড়িতে এমনই লুঠপাট চলল শনিবার ভরসন্ধ্যায়। কোকওভেন থানা এলাকায় ফের এমন চুরির ঘটনায় আতঙ্কে বাসিন্দারা। বারবার এমন ঘটলেও পুলিশ নিষ্ক্রিয়, এই অভিযোগে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিপিএল টাউনশিপে কাছাকাছি দু’টি বাংলোয় থাকেন ডিপিএলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার টিটো দেব এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার অভিজিৎ ঘোষ। শনিবার সন্ধ্যায় দু’টি বাড়িতেই কেউ ছিলেন না। চোরেরা তালা ভেঙে ঘরে ঢোকে। অভিজিৎবাবু শহরের বাইরে আছেন। টিটোবাবু ছিলেন কর্মস্থলে। এক পড়শি খবর দিলে তিনি দৌড়ে যান। তিনি জানান, দু’টি আলমারি ভেঙেছে চোরেরা। কয়েকটি দামী ঘড়ি, ক্যামেরা, প্রেসার কুকার, ফ্রাইং প্যান থেকে বাসনপত্র, খাবারদাবার, এমনকী রেফ্রিজারেটর খুলে মাংসও নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। টিটোবাবু বলেন, “ভরসন্ধ্যায় রাস্তার পাশের বাড়িতে এ ভাবে চুরির পরে আতঙ্কিত আমরা। একের পর এক চুরি হচ্ছে। অথচ কেউ ধরা পড়ছে না। পুলিশ কী করছে, বোঝা যাচ্ছে না।” স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, যে পরিমাণ জিনিস খোয়া গিয়েছে তা থেকে পরিষ্কার, অনেকক্ষণ ধরে লুঠপাট চলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দার বক্তব্য, “চোরেরা নিশ্চিন্ত, পুলিশ আসবে না। তাই ধীরেসুস্থে পরপর দু’টি বাড়িতে চুরি করার সাহস দেখিয়েছে।”

কোকওভেন থানা এলাকায় গত কয়েক মাসে পরপর বেশ কয়েকটি চুরি ও দুষ্কৃতী হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত ১০ মার্চ বিকেলে দিনের আলোয় ডিপিএল কলোনির রাস্তা ও হ্যানিম্যান সরণির সংযোগস্থলে এক বেসরকারি কারখানার ঠিকা শ্রমিকদের বেতনের জন্য নিয়ে যাওয়া টাকার ব্যাগ কারখানার এক কর্মীকে মেরে ছিনিয়ে নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। ৬ অগস্ট গভীর রাতে জাকির হুসেন অ্যাভিনিউয়ের একটি বেসরকারি ক্ষুদ্রশিল্প সংস্থায় ডাকাতি হয়। কারখানার তিন কর্মীকে ঘরে আটকে বেধড়ক মারধর করে মূল্যবান তামার তার নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাতুরিয়া হাউসিং কলোনিতে পরপর দু’টি বাড়িতে তালা ভেঙে চুরি হয়। আরও একটি বাড়িতে তালা ভাঙে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু প্রতিবেশীরা সজাগ হয়ে পড়ায় চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। এর বাইরেও ছোট-খাট চুরি-ছিনতাই লেগে রয়েছে।

Advertisement

সব ঘটনার ক্ষেত্রেই কোকওভেন থানার আশ্বাস, তদন্ত চলছে। কিন্তু কোনও কিছুরই কিনারা হয়নি। এক দিকে, এ সবের কিনারা না হওয়া, অন্য দিকে আবার হুমকির নালিশ করায় অভিযুক্তকে ধরার বদলে অভিযোগকারিণীকেই হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে এই কোকওভেন থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। এই সব ঘটনার পরে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট এলাকার অনেকেই। স্থানীয় বাসিন্দা তথা ডিপিএলের আইএনটিইউসি নেতা উমাপদ দাসের কথায়, “বারবার অপরাধ করেও ধরা পড়ছে না দুষ্কৃতীরা। পুলিশকে আরও সজাগ হতে হবে।” কমিশনারেটের এক আধিকারিক মেনে নেন, এই থানা এলাকায় পুলিশের আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, “এ সবের ফলে সাধারণ মানুষ পুলিশের উপরে আস্থা হারাচ্ছেন।” এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব অবশ্য বলেন, “দুষ্কৃতীদের খুঁজে বের করা ও পুলিশি টহলদারি বাড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন