চেম্বারে তৃণমূলের গোকুলবাবু। —নিজস্ব চিত্র।
দলেরই কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে মারধর ও হেনস্থার অভিযোগ তুলে পদত্যাগ পত্র জমা দিলেন কালনা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোকুলচন্দ্র বাইন। রবিবার রাতে পুরসভার সাফাই বিভাগের দায়িত্বে থাকা গোকুলবাবু নিজের প্যাডে লেখা পদত্যাগ পত্রটি জমা দেন পুরপ্রধানের হাতে।
প্রকাশ্যে কাউন্সিলরকে মারধরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ তাঁর অনুগামীরা। পুরপ্রধান বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বলেন, “যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করতে বলেছি গোকুলবাবুকে।”
দলীয় সূত্রে খবর, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষপাড়া এলাকার একটি ভাঙা টিউবওয়েলের মাথা নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রেখেছিল স্থানীয় এক যুবক। তা নিয়ে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা এলাকায় উত্তেজন্য ছড়ায় বলে অভিযোগ। তাঁদের আট-দশজনের একটি দল রবিবার বিকেলে কাউন্সিলরের বাড়ির সামনে হাজির হয়। তখন বাড়ির নীচের তলার একটি ঘরে রোগী দেখছিলেন পেশায় চিকিৎসক গোকুলবাবু। দলের কালনা শহরের মহিলা সভানেত্রী অপর্ণা মণ্ডল বলেন, “যেটুকু জেনেছি, তৃণমূল কর্মীরা গোকুলবাবুকে ডেকে নিয়ে যায় ঘোষপাড়ায়। সেখানে তর্কাতর্কির পর, ওরা মারধর করে।” ঘটনার পরই কাউন্সিলর পুরো বিষয়টি পুরপ্রধানকে মোবাইলে জানান। ওই দিনই রাত ১০ নাগাদ বিশ্বজিৎবাবু যান তাঁর বাড়ি। সেখানেই গোকুলবাবু পুরপ্রধানের হাতে পদত্যাগ পত্রটি তুলে দেন। ঘটনার কথা শুনে তাঁর বাড়িতে যান উপ -পুরপ্রধান শ্যামল সেনও।
২০১০ সালের পুরভোটে গোকুলবাবু প্রথম কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। সম্প্রতি তাঁরই উদ্যোগে সারা বাংলা জাতীয়তাবাদী চিকিৎসক বন্ধু সমিতি নামে একটি সংগঠন তৈরি হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি তিনি নিজেই। সোমবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, কারা তাঁকে হেনস্থা করল, কেন তিনি তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেননি, সে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি। গোকুলবাবু শুধু বলেন, “পুরপ্রধানকে সব জানিয়েছি। তাঁর হাতেই পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছি। যা বলার তিনি বলবেন।”
তবে গোকুলবাবু এও জানিয়েছেন, কাউন্সিলর হিসাবে পদত্যাগ করলেও দল থেকে তিনি সরছেন না। হামলার বিষয়টি দলের সর্বোচ্চ নেত্রীকেও তিনি জানাতে চান। গোকুলবাবু তাঁর উপর হামলা নিয়ে কিছু বলতে না চাইলেও, এ দিন প্রকাশ্যে কাউন্সিলরের উপরে হামলার নিন্দা করেন ১৩ ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতৃত্বের অনেকে। মহিলা সভানেত্রী অপর্ণা মণ্ডল বলেন, “তীব্র নিন্দা করছি। কিভাবে ঘটনার প্রতিবাদ জানানো যায় তা নিয়ে আলোচনা চলছে।” তাঁর দাবি, এর আগে আরও দু’বার কাউন্সিলরের উপরে হামলার নজির রয়েছে। পুরপ্রধান বলেন, “ওঁর পদত্যাগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান হয়েছে।