বিচারক ঘেরাওয়ের ঘটনার পর থেকেই চলছে কর্মবিরতি। —ফাইল চিত্র।
বিচারকের বদলির দাবিতে দুর্গাপুর আদালতে কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দুই পক্ষে ভাগ হয়ে গেলেন আইনজীবীরা।
দুর্গাপুরের মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বৈঠক করার পরেই আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা ভেবে এ বার কর্মবিরতি তুলে নেওয়া উচিত। তবে শুক্রবারও বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের আগে কর্মবিরতি তোলা যাবে না।
গত ৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে কর্মবিরতি, আগামী ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তা চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছে বার কাউন্সিল। কিন্তু এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি তোলার আবেদন জানিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন অপূর্ববাবু। তার পর থেকেই আইনজীবীদের একাংশ চাইছেন, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা ভেবে মেয়রের অনুরোধকে সম্মান দিয়ে কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হোক। ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক আশুতোষ সরকারের বদলির যে দাবি নিয়ে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছিল, সেই দাবি অন্য ভাবেও জানানো যায়।
গত শুক্রবার বিকেলে দুর্গাপুর ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে বধূ নির্যাতনের একটি মামলার শুনানি চলছিল। অভিযোগ, আসামি পক্ষের আইনজীবী সওয়াল করার সময়েই বিচারক আশুতোষ সরকার এজলাস ছেড়ে উঠে যেতে চান। আইনজীবীরা শুনানি শেষ করার অনুরোধ জানালেও তিনি তা গ্রাহ্য করেননি বলে অভিযোগ। এর পরেই আইনজীবীরা এজলাসের ভিতরে ওই বিচারককে আটকে রেখে বাইরে থেকে দরজা আটকে দেন। আদালতের অন্যান্য এজলাসের দরজাও বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরের দিন জেলা জজের সঙ্গে বৈঠকে বিচারক আশুতোষ সরকারকে অন্যত্র বদলির দাবি জানায় বার অ্যাসোসিয়েশন। তাতে কাজ না হওয়ায় কর্মবিরতি শুরু করেন আইনজীবীরা।
তৃণমূলের আইনজীবী সেলের সভাপতি দেবব্রত সাঁই বলেন, “সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা ভেবেই মেয়র কর্মবিরতি তুলতে অনুরোধ করেছেন। তৃণমূল আইনজীবী সেলের পক্ষ থেকে আমরা মেয়রের অনুরোধকে সর্মথন করছি। তবে বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হিসাবে বারের সিদ্ধান্ত মানতে আমরা বাধ্য।” বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, ১৬ ডিসেম্বরের আগে কর্মবিরতি তোলা সম্ভব নয়। কারণ অনেক আইনজীবীই এখন বাইরে আছেন। আচমকা কর্মবিরতি তুললে তাঁরা কাজে যোগ দিতে পারবেন না। মেয়রের অনুরোধ তাঁরা বিবেচনা করছেন জানিয়ে বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবীদাস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই মুহূর্তে কর্মবিরতি তোলা যাবে না। ১৬ ডিসেম্বর বৈঠক করে আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।”