নাবিধসা রুখতে বীজ শোধনের পরামর্শ

জেলার গ্রামীণ এলাকার শীতকালীন বাজার অনেকটাই নির্ভর করে আলু চাষের উপর। অথচ প্রতিবারই কোনও না কোনও এলাকায় নাবিধসা রোগের প্রকোপে ক্ষতিগ্রস্থ হয় আলু চাষ। তবে কৃষি বিশেষজ্ঞদের দাবি, গোড়াতে সতর্ক হলে এই রোগ অনেকটাই ঠেকানো যেতে পারে। এ জেলায় প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। কালনা, মেমারি, জামালপুর, রায়না-সহ একাধিক ব্লকের চাষিদের দাবি, গত সাত বছর লাগাতার চাষের মাঝ পথে নাবিধসা রোগের সম্মুখীন হচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০০
Share:

চলছে আলু চাষের জমি তৈরি।—নিজস্ব চিত্র।

জেলার গ্রামীণ এলাকার শীতকালীন বাজার অনেকটাই নির্ভর করে আলু চাষের উপর। অথচ প্রতিবারই কোনও না কোনও এলাকায় নাবিধসা রোগের প্রকোপে ক্ষতিগ্রস্থ হয় আলু চাষ। তবে কৃষি বিশেষজ্ঞদের দাবি, গোড়াতে সতর্ক হলে এই রোগ অনেকটাই ঠেকানো যেতে পারে।

Advertisement

এ জেলায় প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। কালনা, মেমারি, জামালপুর, রায়না-সহ একাধিক ব্লকের চাষিদের দাবি, গত সাত বছর লাগাতার চাষের মাঝ পথে নাবিধসা রোগের সম্মুখীন হচ্ছেন তাঁরা। ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে গাছ বাঁচাতে প্রচুর টাকার কীটনাশক ছড়াতে হচ্ছে। ফলে একদিকে চাষের খরচ বাড়ছে, আবার ফলনও কমে যায় বলে চাষিদের দাবি।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারির মাঝামাঝি নাবিধসার সংক্রমণ শুরু হয়। মেঘলা আকাশ, ঝিরঝিরে বৃষ্টি তার সঙ্গে আচমকা শীত কমে যাওয়া মিলে ছত্রাকের সংক্রমণ বেড়ে যায়। ক্ষতি হয় গাছের। তবে আলু গাছের বয়স ৬০ দিন পেরিয়ে ফলনে তেমন প্রভাব পড়ে না বলে দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই নভেম্বরের মাঝামাঝি আলু লাগিয়ে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের আরও পরামর্শ, সরকারি শংসাপত্র থাকা বীজ ব্যবহার করতে হবে। তার আগে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে শোধন করে নিতে হবে ওই বীজ। এক্ষেত্রে কাটা আলুর টুকরো ম্যানকোজেব অথবা ট্রাইকোডারমাভিরিডি জাতীয় ওষুধ দিয়ে প্রথমে শোধন করতে হবে। পরে শোধিত আলুবীজ ছায়ায় রেখে জমিতে পোঁতার কাজ শুরু করতে হবে। কৃষি কর্তাদের পরামর্শ, জমির কাছাকাছি ছায়া ঘেরা জায়গায় বীজ রাখতে পারলে ভাল ফল মেলে। তবে অনেক চাষি অতিরিক্ত ফলনের আশায় জমিতে বেশি করে নাইট্রোজেন জাতীয় সার প্রয়োগ করেন। এতে হিতে বিপরীত হয় বলেই বিশেষজ্ঞদের দাবি। তাঁরা জানান, নাইট্রোজেন সারের আধিক্য রয়েছে এমন জমিতে দ্রুত নাবিধসার ছত্রাক ছড়ায়। তা রুখতে নির্দিষ্ট পরিমাণ রাসায়নিক সারের পাশাপাশি জৈব সার প্রয়োগেরও পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। জেলা কৃষি দফতররে এক সহ-কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “নাবিধসা ঠেকাতে সব থেকে জরুরি বীজ বাছাই করা।” তাঁর দাবি, আগের বছর কালনা মহকুমা কৃষি খামারের কিছু জমিতে আলু বীজের চাষ করা হয়েছিল নিয়ম মেনে। ফলে নাবিধসার আক্রমণ হয়নি। আর এক কর্তার কথায়, “পঞ্জাবের বলে বাজার থেকে মোটা দামে বীজ কিনে প্রতিবার বহু চাষি প্রতারিত হন। তাই বীজ কেনার আগে সরকারি শংসাপত্র রয়েছে কি না খতিয়ে দেখা উচিত।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন