বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন ওই বিভাগেরই এক শিক্ষক। রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতরের কাছেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
অমলেন্দু সিংহবাবু নামে ওই শিক্ষকের দাবি, সমস্ত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাঁকে ওই পদে নিয়োগ করা হয়নি। এমনকী নিয়োগ কমিটির তরফে বলা হয়েছে, ওই পদের উপযুক্ত শিক্ষক মেলেনি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উচ্চ শিক্ষা দফতরের সহ-সচিব পি কে দাস বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যায়ের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। ১৭ জুলাই লেখা ওই চিঠিতে অমলেন্দুবাবুর অভিযোগের জবাবে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়কে।
অমলেন্দু সিংহবাবুর অভিযোগ, গত ১২ জুন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্ট লেক ক্যাম্পাসের রসায়ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত ইন্টারভিউ ছিল। সেখানে তিন জন অভ্যন্তরীন শিক্ষককে প্রফেসর পদে উন্নীত করা হয়। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে কেরিয়ার অ্যাডভান্স স্কিম ও অন্যজনকে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের ওপেন পদে উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু ওই তিন শিক্ষকের কেউই সর্ব স্তরে প্রথম বিভাগ প্রাপ্ত নন। কেউ উচ্চমাধ্যমিকে দ্বিতীয় ডিভিশন, কেউ বা স্নাতক পর্বে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন। অমলেন্দুবাবুর দাবি, বরাবর প্রথম বিভাগে পাশ এবং নেট পরীক্ষায় সফল হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে ওই পদ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া দীর্ঘ ১৮ বছরের কর্মজীবনে দেশে-বিদেশে একাধিক গবেষনাপত্রও প্রকাশ করেছেন ওই শিক্ষক। অমলেন্দুবাবুর আশা, উচ্চ শিক্ষা দফতরের কাছ থেকে সুবিচার পাবেন তিনি। তাঁর আরও অভিযোগ, কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নেই। ফলে বাম আমলেও তাঁকে অ্যাসোসিয়েটে প্রফেসর পদে নিযুক্ত করা হয়নি। নতুন সরকারের আমলেও বঞ্চিতই রয়ে গেলেন তিনি। অমলেন্দুবাবুর কথায়, “গত ১২ জুন ওই ইন্টারভিউ বোর্ডে যাদবপুর, চেন্নাই ও উৎকল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন প্রবীণ শিক্ষক ছিলেন। ছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যায়ও। ইন্টারভিউ শেষে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকারও।” রেজিস্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যায় অবশ্য ইন্টারভিউয়ে হাজির থাকা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমি ওই ইন্টারভিউতে ছিলাম না। এক বিশেষজ্ঞ কমিটি রসায়ন বিভাগের ওই পদের জন্য শিক্ষকদের নিয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সে পরামর্শ আমরা মেনেছি। এর মধ্যে দুর্নীতির সুযোগ কোথায়?”
আর দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতরের রিপোর্ট তলব সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর দাবি, “আমরা উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে পাঠানো এ ধরনের কোনও চিঠি পাইনি। যদি পাই, তাহলে ইন্টারভিউতে আসা সমস্ত শিক্ষকদের বিশেষজ্ঞরা কে কি নম্বর দিয়েছেন, তা উচ্চশিক্ষা দফতরকে জানিয়ে দেব।”