দাবি জেলা পরিষদের

পুরনো বাসিন্দা হলে মিলবে রেশন কার্ড

এলাকার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা হলেই এ বার মিলবে রেশন কার্ড। সম্প্রতি জেলা খাদ্য নিয়ামকের সঙ্গে বৈঠকের পরে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পরিষদ। প্রায় এক লক্ষ নতুন কার্ডও বিলি করা হবে। সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “রেশন কার্ড পেতে এতদিন জন্মের শংসাপত্র, এলাকায় বসবাসের প্রমাণ ইত্যাদি নানা নথি প্রয়োজন হত।

Advertisement

রানা সেনগুপ্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৪ ০১:২১
Share:

এলাকার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা হলেই এ বার মিলবে রেশন কার্ড। সম্প্রতি জেলা খাদ্য নিয়ামকের সঙ্গে বৈঠকের পরে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পরিষদ। প্রায় এক লক্ষ নতুন কার্ডও বিলি করা হবে।

Advertisement

সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “রেশন কার্ড পেতে এতদিন জন্মের শংসাপত্র, এলাকায় বসবাসের প্রমাণ ইত্যাদি নানা নথি প্রয়োজন হত। জন্মের শংসাপত্র না থাকায় বহু আদিবাসী পরিবার রেশন কার্ডের সুবিধাও পাননি। তাই নিয়ম কিছুটা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা বিডিও কাউকে এলাকায় দীর্ঘদিন রয়েছেন এমন প্রমান দিলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা তাঁর পরিবার রেশন কার্ড পেয়ে যাবেন।”

তবে রেশন কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়মকানুন কতটা শিথিল করা হবে, তা বলতে পারেননি জেলা খাদ্য নিয়ামক সাধনকুমার পাঠক। তিনি বলেন, “সরকারি নিয়ম অনুসারে রেশন কার্ড হাতে পেতে গেলে গ্রাহককে অবশ্যই জন্ম সংক্রান্ত শংসাপত্র জমা দিতে হবে। তবে যদি কারও তা না থেকে, তাহলে তাঁদের কী ভাবে রেশন কার্ড দেওয়া যায়, সে বিষয়ে আমায় রাজ্য খাদ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলতে হবে। খাদ্য দফতর অনুমোদন না দিলে ওই নিয়ম বদলানো সম্ভব হবে না।”

Advertisement

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিজিট্যাল রেশন কার্ডের প্রক্রিয়াও শেষের মুখে। সভাধিপতির দাবি, এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ ভাগ গ্রাহককে ডিজিট্যাল রেশন কার্ডের আওতায় আনা হয়েছে। আরও ১০ থেকে ১৫ ভাগ মানুষকে ওই কার্ডের আওতায় আনতে পারলেই কাজটি সম্পন্ন হয়ে বলেছে ধরে নেওয়া হবে। কারণ যাঁদের নামে রেশন কার্ড রয়েছে, তাঁদের অনেকেই মারা গিয়েছেন বা অন্যত্র চলে গিয়েছেন। কারও নামে আবার দুটি করে কার্ড রয়েছে। ফলে শতকরা ৮৫ ভাগ গ্রাহককে ডিজিট্যাল কার্ডের আওতায় আনতে পারলেই যথেষ্ট। এর সঙ্গেই প্রায় এক লক্ষ নতুন কার্ড বিলি করা হবে। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ৬০ হাজার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন যাঁরা নথিপত্রের অভাবে এতদিন রেশন কার্ড পাননি। ৩০ জুন, হুল দিবস উপলক্ষ্যে ওই কার্ড দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ওই দিনই বর্ধমান আদালত চত্বরে, জেলাশাসকের দফতরের সামনে দুই সাঁওতাল বীর, সিধো, কানহুর মূর্তিও স্থাপন করা হবে। মূর্তি উদ্বোধন করবেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। হুল দিবস উপলক্ষে আদিবাসী কল্যাণের একগুচ্ছে প্রকল্পও হাতে নিয়েছে বর্ধমান জেলা পরিষদ। দেবুবাবু বলেন, “ওই দিন উৎসব করে আমরা সমস্ত ব্লকের প্রায় ৫ হাজার আদিবাসীকে ২০০ একরের মতো জমিতে নিজ গৃহ নিজ ভূমি প্রকল্পে পাট্টা দেব। বর্ধমানের উৎসব মঞ্চে বর্ধমান সদর ও বর্ধমান উত্তর এলাকার আদিবাসীদের পাট্টা দেওয়া হবে।”

জেলা পরিষদের খাদ্য ও খাদ্য সরবারাহ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল বলেন, “ডিজিট্যাল রেশন কার্ড তৈরির কাজ শতকরা ৭১ ভাগের মতো হয়েছে। এরপরে আদিবাসী এলাকায় শিবির করে নতুন রেশন কার্ড বিলি করা হবে। যদি নতুন রেশন কার্ডের কোনও প্রাপক শিবিরে না আসতে পারেন, তাহলে তাঁর বাড়িতে কার্ড পৌঁছে দেওয়া হবে।” এছাড়া রেশন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে ডিলার ও ডিষ্ট্রিবিউটরদের গুদামে খাদ্য দফতরের অফিসারেরা ও জেলা পরিষদের বিভাগীয় প্রতিনিধিরা নিয়মিত হানা দেবেন। নতুন রেশন কার্ডের চাপ কমাতে নতুন করে আরও ৪৮ জনকে ডিলারশিপ দেওয়া হবে। কোন ডিলারেরা যদি ব্যবসা বন্ধ রাখেন তাহলে কারণ খতিয়ে দেখে তাঁদের তালিকা করা হবে। তাঁদের জায়গায় নতুন লোকও নিয়োগ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন