প্রশাসক দায়িত্ব নেওয়ার দিনই অশান্তি কুলটিতে

পুরসভার দায়িত্ব প্রশাসকের হাতে যাওয়ার দিনই ফের অশান্তি হল কুলটিতে। বকেয়ার দাবিতে কুলটি পুরভবনে গিয়ে বাস্তুকারের দফতর তছনছ করলেন কিছু ঠিকাদার। পুরসভার তরফে অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। আসানসোল ও কুলটিদুই পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষে হয়ে গিয়েথে বুধবার। ভোট না হওয়া পর্যন্ত বৃহস্পতিবার থেকে দুই পুরসভারই প্রশাসকের দায়িত্ব নিলেন আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক অমিত দত্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৪ ০১:৪৩
Share:

বাস্তুকারের দফতর তছনছ।

পুরসভার দায়িত্ব প্রশাসকের হাতে যাওয়ার দিনই ফের অশান্তি হল কুলটিতে। বকেয়ার দাবিতে কুলটি পুরভবনে গিয়ে বাস্তুকারের দফতর তছনছ করলেন কিছু ঠিকাদার। পুরসভার তরফে অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

Advertisement

আসানসোল ও কুলটিদুই পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষে হয়ে গিয়েথে বুধবার। ভোট না হওয়া পর্যন্ত বৃহস্পতিবার থেকে দুই পুরসভারই প্রশাসকের দায়িত্ব নিলেন আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক অমিত দত্ত। এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ আসানসোল পুরসভায় যান তিনি। মেয়রের চেম্বারে গিয়ে বসেন তিনি। সেখানে আগে থেকেই হাজির ছিলেন পুরসভার নানা দফতরের অফিসারেরা। তবে সদ্য প্রাক্তন মেয়র, ডেপুটি মেয়র বা কাউন্সিলরদের দেখা যায়নি। সেখানে দায়িত্ব বুঝে নিয়ে বিকেলে কুলটি পুরসভায় যান অমিতবাবু। সেখানে অবশ্য তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিলেন সদ্য প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান বাচ্চু রায়-সহ বেশ কিছু কাউন্সিলর। কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসেন পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। কুশল বিনিময়ের পরে দায়িত্বভার বুঝে নেন অমিতবাবু। বিভিন্ন দফতরের অফিসারদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলেন তিনি।

দুই পুরসভায় প্রশাসকের দায়িত্ব নেওয়ার পরে অতিরিক্ত জেলাশাসক অমিতবাবু জানান, দুই শহরে নাগরিক পরিষেবা যেন কোনও ভাবে বিঘ্নিত না হয়, সে দিকে কড়া নজর রাখা হবে। তিনি বলেন, “আমি অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছি, পুরসভায় একটি অনুসন্ধান কেন্দ্র তৈরি করতে হবে, যাতে নাগরিকেরা সেখানে প্রয়োজনীয় দফতরের হদিস সঙ্গে সঙ্গে পান।” এ দিন অমিতবাবু আরও জানান, এই দুই পুর এলাকায় জল, নিকাশি, ত্রাণ ও প্রাথমিক স্কুলগুলিতে মিড-ডে মিল যেন কোনও ভাবে ব্যাহত না হয়, সে দিকে বিশেষ ভাবে নজর দিতে হবে। নাগরিকেরা বিভিন্ন প্রয়োজনে পুরসভায় শংসাপত্র নিতে আসেন। অমিতবাবু দফতরের কর্মীদের ডেকে জানিয়ে দিয়েছেন, প্রয়োজনে আসা নাগরিকদের কখনও যেন ফেরানো না হয়। ব্যবসায়ীরা যেন ট্রেড লাইসেন্স নিতে এসে অযথা হয়রানির শিকার না হন, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। পুরসভা দু’টির অ্যাকাউন্টস অফিসারদের তিনি আয়-ব্যয়ের হিসেব তৈরি রাখার নির্দেশ দেন। কুলটিতে অমিতবাবুর নির্দেশ, শহরের বিভিন্ন এলাকায় কতগুলি বৈধ ও অবৈধ হোর্ডিং আছে, তার তালিকা তৈরি করে তাঁর কাছে জমা দিতে হবে। পুরসভার কাজকর্ম চালানোর বিষয়ে তিনি কাউন্সিলরদের সাহায্যও চেয়েছেন।

Advertisement

আসানসোল পুরসভায় প্রশাসকের দায়িত্ব নিলেন
অতিরিক্ত জেলাশাসক অমিত দত্ত। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

এ দিন কুলটিতে যখন ক্ষমতা হস্তান্তর পর্ব চলছিল তখন হঠাৎই পুরসভার বাস্তুকার দফতরে গিয়ে তছনছ করেন ঠিকাদারদের একটি অংশ। তাঁদের অভিযোগ, গত পাঁচ বছর ধরে তাঁরা পুরসভা থেকে বরাত পেয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু তাঁদের কয়েক কোটি টাকা এখনও মেটানো হয়নি। বারবার চেয়েও সেই টাকা পাচ্ছেন না তাঁরা। পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সেই টাকা আর পাবেন কি না, সে নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা। পুরসভা থেকে বেরোনোর মুখে ওই ঠিকাদারেরা প্রশাসক অমিতবাবুর কাছে ক্ষোভের কথা জানান। এই বিষয়ে অমিতবাবু বলেন, “আমি বকেয়া মেটানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করব।” তবে তিনি জানান, পুরসভার সব কাজই প্রকল্পের আওতার মধ্যে হয়। সেই সব প্রকল্পের কাজের বরাদ্দ নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে আসে ও মেটানো হয়। এই সব কাজের বকেয়া থাকলে তিনি মেটানোর চেষ্টা করবেন। কিন্তু প্রকল্প বহির্ভূত কাজের বকেয়া মেটানো নিয়ে কোনও আশ্বাস দিতে পারেননি।

ছবি: শৈলেন সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন