স্কুলে নোটিস। —নিজস্ব চিত্র।
মহকুমা প্রশাসনের চাপে শেষ পর্যন্ত পড়ুয়াদের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত ভর্তি ‘ফি’ ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন বেনাচিতির ভারতী হিন্দি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, কর্তৃপক্ষের তরফে নোটিস দিয়ে মঙ্গলবার বিকেল চারটে নাগাদ সমস্ত অভিভাবকদের ডেকে পাঠানো হয়েছে।
শিক্ষার অধিকার আইনে অষ্ঠম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে পড়াশোনা করা যায়। তবু স্কুল চালাতে খরচের কথা ভেবে পড়ুয়াদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ২৪০ টাকা নেওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর। অথচ ভারতী হিন্দি বিদ্যালয়ে মাস খানেক আগে পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের কাছে ভর্তি ‘ফি’ বাবদ ৫২০ টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। উন্নয়ন খাতেই ২৪০ টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তাছাড়া স্বাস্থ্যর জন্য ১০ টাকা, সরস্বতী পুজো বাবদ ৩০ টাকা ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য মাসিক ২০ টাকা হারে সারা বছরের জন্য ২৪০ টাকা নেওয়া হয় বলে অভিভাবকদের সূত্রে জানা যায়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ধর্মেন্দ্র প্রসাদ অতিরিক্ত ‘ফি’ নেওয়ার কারণ হিসাবে বলেন, “স্কুল চালানোর খরচ জোটাতেই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” তখন ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের অভিযোগ করেন, তাঁদের অধিকাংশেরই স্থায়ী রোজগার না থাকায় ওই ‘ফি’ তাঁরা দিতে পারবেন না। তাছাড়া পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সিলেবাসে কোথাও বাধ্যতামূলক কম্পিউটার শিক্ষার কথা বলা নেই। তাহলে কেন এই ‘অতিরিক্ত’ টাকা নেওয়া হল? অভিভাবকরা তখন আরও অভিযোগ করেন, ভর্তি বাবদ নেওয়া ‘ফি’-র কোনও সঠিক রসিদও স্কুলের তরফে দেওয়া হয়নি।
বিষয়টি নজরে আসে মহকুমা প্রশাসনের। শুক্রবার স্কুল কর্তৃপক্ষকে অতিরিক্ত ‘ফি’-র কারণ দর্শাতে বলেন মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত। স্কুল কর্তৃপক্ষ সঠিক কোনও কারণ দেখাতে পারেননি বলে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এরপরই তিনি অতিরিক্ত ‘ফি’ অভিভাবকদের ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। মহকুমাশাসক বলেন, “সরকারি নির্দেশের বাইরে গিয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি কোনও ভাবেই সমর্থন করবে না প্রশাসন।” অভিভাবকদের তরফে বলা হয়েছে, কেউ যদি স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত টাকা দিতে চান তাহলে তাঁদের আপত্তি নেই। তবে যাঁরা অপারগ তাঁরা অতিরিক্ত টাকা ফেরত নেবেন। ‘ফি’ ফেরত দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।