স্কুলের সামনে নিষেধাজ্ঞা ফোনে। নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যমিকের মতো উচ্চ মাধ্যমিকেও পরীক্ষার্থীর সংখ্যায় এগিয়ে রইল মেয়েরা। আজ, শুক্রবার থেকে শুরু হতে চলেছে নতুন সিলেবাসের পরীক্ষা। পুরনো সিলেবাসের পরীক্ষা অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছে বৃহস্পতিবার থেকেই। বর্ধমান জেলায় মোট ১৫৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের বর্ধমান আঞ্চলিক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান জেলায় এ বছর মোট পরীক্ষার্থী ৫২৩৫৬ জন। তার মধ্যে ছেলের সংখ্যা ২৫৯১০। ছাত্রী ২৬৪৪৬ জন। পুরনো সিলেবাসে অবশ্য ১৩০৩৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৭২৭১ ও ছাত্রী ৫৭৬৫ জন। পরীক্ষা চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
পরীক্ষার ধরনেও এ বার পরিবর্তন এনেছে সংসদ। এ বার প্রশ্নপত্র দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ভাগে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র সাবেক ধরনের। দ্বিতীয় ভাগে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র সম্বলিত ‘বুকলেট’ দেওয়া হবে পরীক্ষার্থীদের। তাতে ‘মাল্টিপল চয়েস’ ও ছোট প্রশ্ন থাকবে। সব প্রশ্নের মান ১ নম্বর। পরীক্ষা শেষে প্রথম ভাগের উত্তরপত্র এবং দ্বিতীয় ভাগের বুকলেট সুতো দিয়ে বেঁধে জমা দিতে হবে। পরীক্ষার্থীরা একমাত্র প্রথম ভাগের প্রশ্নপত্রটিই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবে।
তবে পরীক্ষার ধরন পাল্টানো নিয়ে খানিকটা সংশয়ে পরীক্ষার্থীরা। তাঁদের মতে, আগে কোনও পরীক্ষা এই রকম প্রশ্নপত্রে দিতে হয়নি। তাই অন্তত পক্ষে টেস্ট পরীক্ষায় এই পদ্ধতি চালু করা হলে খানিকটা সড়গড় হয়ে নেওয়া যেত। কয়েক জন পড়ুয়া বলে, “দিন কয়েক আগে সংবাদপত্রে পড়ে এই নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষার কথা জেনেছি। অনেকে হয়তো জানেই না। এত অল্প সময়ের প্রস্তুতিতে পরীক্ষা কতটা ভাল হবে, সে নিয়ে খানিকটা চিন্তা রয়েছে। আসল পরীক্ষার আগে টেস্ট পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্নপত্র থাকলে সুবিধে হত।” এক অভিভাবকও বলেন, “প্রথম বার এমন নতুন ধরনের প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে গিয়ে ঘাবড়ে যেতে পারে ছেলেমেয়েরা।”
পরীক্ষায় নজরদারির কাজে থাকবেন যে সব শিক্ষকেরা, নতুন প্রশ্নপত্র নিয়ে তাঁদেরও কৌতূহল রয়েছে। কয়েক জন শিক্ষকের দাবি, সপ্তাহ দুয়েক আগে তাঁরা গোটা বিষয়টি জেনেছেন। কিন্তু পড়ুয়ারা এখন আর স্কুলে আসে না, তাই তাদের খবর দেওয়ার সুযোগ নেই। দ্বিতীয় ভাগের প্রশ্নপত্র কী ভাবে বিলি করা হবে তা তাঁদের অনেকের কাছে এখনও পরিষ্কার নয় বলেও দাবি করেন তাঁরা। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের বর্ধমান আঞ্চলিক আধিকারিক সৌভিক গড়াই অবশ্য বলেন, “প্রশ্নপত্রের নতুন ধরন নিয়ে যাতে সমস্যা না হয় সে জন্য ইনভিজিলেটরের সংখ্যা বাড়ানোর কথা ভাবা হয়েছে।”
সৌভিকবাবু আরও বলেন, “একই সঙ্গে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষাও শুরু হচ্ছে। প্রথমে উচ্চ মাধ্যমিক ও পরের অর্ধে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা হবে।” উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের জেলা উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য রথীন মল্লিক বলেন, “এ বার জেলায় দু’টি নতুন পরীক্ষাকেন্দ্র চালু করা হয়েছে, একটি দুর্গাপুরে ও অন্যটি আউশগ্রামে।” সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরীক্ষা চলার দিনগুলিতে পরীক্ষাকেন্দ্র নয় এমন স্কুলগুলিকেও খোলা রাখতে হবে। উপস্থিত থাকতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। কারণ, যে কোনও স্কুলের শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে নজরদারির কাজে পাঠানো হতে পারে পরীক্ষাকেন্দ্রে।
সংসদের তরফে জানানো হয়েছে, পরীক্ষার সময়ে পর্যাপ্ত বাস চালানোর ব্যবস্থা করার জন্য জেলা পরিবহণ দফতরকে আর্জি জানানো হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মোবাইল মেডিক্যাল টিম ঘুরে বেড়াবে। সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে।