এই হাল নর্দমার। —নিজস্ব চিত্র।
ছোট-বড় মিলিয়ে রয়েছে প্রায় চারশো দোকান। কিন্তু ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই বুদবুদ বাজারে। আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা নেই। ফলে, চারপাশ ভরে থাকে নোংরায়। আবর্জনা জমে থাকায় নিকাশি ব্যবস্থাও বেহাল। বাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ক্ষোভ, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে বারবার জানিয়েও লাভ হয়নি।
বুদবুদ সেনাছাউনির পাশে পুরনো জিটি রোডের উপরের এই প্রাচীন বাজারটিই এলাকার একমাত্র বিকিকিনির জায়গা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে এই বাজারের নাম ছিল বুদবুদ চটি। শোনা যায়, সুলতানি আমলে এখানে তীর্থযাত্রীরা বিশ্রাম নিতেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে এই বাজারটি তৈরি হয়। এখন প্রতি দিন সকাল ও বিকেলে এখানে নিয়মিত সব্জি ও মাছের বাজার বসে। স্থানীয় বাসিন্দারা ছাড়াও পথচলতি লোকজন এই বাজার থেকে কেনাকাটা করেন। ভিড় হয় ভালই। অথচ, গুরুত্বপূর্ণ এই বাজার সব সময়ই অপরিষ্কার থাকে। বাজারে কোনও পাকা নিকাশি নালা নেই। বৃষ্টি হলেই দোকানে জল ঢুকে যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ী মহম্মদ আকবর জানান, অনেক দিন আগে নিকাশি নালাটি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আবর্জনা জমে নালাটি এখন বন্ধ। মানকরের বাসিন্দা সুকুমার পালের ক্ষোভ, “জি টি রোড দিয়ে সারা দিনই প্রচুর গাড়ি চলে। রাস্তা পারাপারে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। এই বিষয়ে প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।”
মাছ বাজারে কয়েকটি পাকা ঘর থাকলেও সব্জি বাজারে নেই কোনও পাকা ঘর। ফলে অস্থায়ী ছাউনির নিচেই বসে সব্জির বাজার। বৃষ্টি, রোদের মধ্যে চলে কেনাকাটা। জিটি রোডের মত ব্যস্ত সড়কের পাশে অবস্থিত হওয়ায় অনেক সময়েই দোকানগুলি রাস্তার ধুলোতে ভরে যায়। সব্জি ব্যবসায়ী বাবুলাল আঁকুড়ের ক্ষোভ, “জিটি রোড দিয়ে সারা দিন প্রচুর যানবাহন যাতাযাত করে। ফলে বাজরর ধুলোয় ভরে যায়। বিক্রিতেও সমস্যা হয়।” এলাকা বড় হওয়ায় জন্য বুদবুদ বাজারকে সব্জি মাণ্ডি হিসেবে গড়ে তোলার দাবি তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। পাকা নিকাশি নালা তৈরির দাবিও উঠেছে বার বার। দরবার করা হয়েছে ব্লক প্রশাসনের কাছে। কিন্তু ওই বাজারের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ব্লক অফিস থেকে বিভিন্ন সময় আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। বুদবুদ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি রতন সাহা বলেন, “আমরা প্রশাসনের কাছে বাজার সংস্কারের বিষয়ে নানা দাবি করলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” সমস্যার কথা স্বীকার করে গলসি ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “বুদবুদ বাজারের পাশে পাকা নিকাশি নালা তৈরির উদ্যোগ হয়েছে। অর্থ অনুমোদন হলেই কাজ শুরু হবে। সব্জি মান্ডি তৈরির জন্য উপযুক্ত জায়গার খোঁজ চলছে।”