বালিঘাট তৈরির প্রতিবাদ করায় মারধরের নালিশ

দুষ্কৃতীদের দাপটে কপি, আলু-সহ নানা ফসল মাঠ থেকে তোলা যাচ্ছে না। রাস্তা দিয়ে পারাপার করতে গেলে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বালিঘাট তৈরির কাজে বাধা দেওয়ার জন্য এমন দৌরাত্ম্য করছে বলে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেন দামোদরের তীরবর্তী বেঁশিয়া, উত্তর পলশুড়া, উত্তর অমৃতপাড়া মৌজার বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বুদবুদ শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:০১
Share:

দুষ্কৃতীদের দাপটে কপি, আলু-সহ নানা ফসল মাঠ থেকে তোলা যাচ্ছে না। রাস্তা দিয়ে পারাপার করতে গেলে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বালিঘাট তৈরির কাজে বাধা দেওয়ার জন্য এমন দৌরাত্ম্য করছে বলে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেন দামোদরের তীরবর্তী বেঁশিয়া, উত্তর পলশুড়া, উত্তর অমৃতপাড়া মৌজার বাসিন্দারা।

Advertisement

বর্ধমানের বুদবুদ ঘেঁষা এই সব এলাকা আদতে বাঁকুড়ার সোনামুখি ব্লকের মধ্যে পড়ে। সেখানকার বাসিন্দারা সম্প্রতি বালিঘাট বন্ধের আর্জি জানিয়ে সোনামুখির বিডিও এবং বিষ্ণুপুরের কংসাবতী ডিভিশনের রেভিনিউ অফিসারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। প্রশাসনের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

দামোদরের উত্তর দিকে বুদবুদের কসবা লাগোয়া এলাকায় রয়েছে এই বেঁশিয়া, পলশুড়া, রুপাইসায়ের, বড়া মৌজা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৫৭ সাল থেকে এই সব এলাকায় বেশ কিছু পরিবার কলোনি তৈরি করে বাস করছেন। চাষাবাদ করে তাঁদের সংসার চলে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই সব জায়গায় দামোদরের পাড়ে বালিঘাট তৈরির চক্রান্ত শুরু করেছে কিছু দুষ্কৃতী। এলাকাবাসীর দাবি, এমনিতেই প্রতি বর্ষার সময় একটু একটু করে জমি নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। এখান যদি আবার বালিঘাট তৈরি হয় তাহলে ভাঙন আরও বাড়বে। বাসিন্দারা দাবি করেন, বালিঘাট তৈরির কাজে তাঁরা অনেক বার বাধা দিয়েছেন। তাতেই বিপদ বেড়েছে। এলাকার বাসিন্দা সন্তোষ মণ্ডল, বাবুল দাসেরা অভিযোগ করেন, এর পর থেকে তাঁদের মারধর করছে। প্রশাসনিক ভাবে বাঁকুড়া জেলার মধ্যে পড়লেও স্কুল-কলেজ, বাজার-দোকান-সহ নানা কাজের জন্য এই এলাকার মানুষজন বর্ধমানের বুদবুদ ও গলসির উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু এখন সেদিকের রাস্তা দিয়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।

Advertisement

দুষ্কৃতীদের হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন বাসিন্দারা। অমল মণ্ডল, বাবন চৌধুরীরা অভিযোগ করেন, ওই সব দুষ্কৃীতারা তাঁদের জিনিসপত্র কেড়ে নিচ্ছে। তাঁরা বলেন, “প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে ওরা। এমনকী, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাসখানেক আগে দুষ্কৃতীরা তাঁদের আলু বোঝাই বেশ কয়েকটি গাড়ি রাস্তায় আটকে দেয়। টাকা দিতে হবে বলে হুমকিও দেয়। এর পরেই স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে অভিযোগ করেন। কিন্তু দিন কয়েক পরে আবার সেই এক অবস্থা। এর ফলে মাঠের সব্জি মাঠেই পড়ে থাকছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, যেখানে বালিঘাটে হচ্ছে, সেখানে যাওয়ার রাস্তা একটিই। সেই পথে একটি হাইস্কুল, তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ওই রাস্তা ধরে এলাকার ছোট ছেলেমেয়েরা যাতায়াত করে। বালির গাড়ি যাতায়াত শুরু করলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়বে। বাইরের লোকজনের আনাগোনা হলে দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্যও বাড়বে। এই সব বিবেচনা করে ওই বালিঘাটগুলি বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে তাঁদের দাবি।

বিষ্ণুপুরের কংসাবতী রেভিনিউ ডিভিশন ২-এর রেভিনিউ অফিসার সৌরভ সেন বলেন, “এলাকাবাসীর দাবিপত্র পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন