ভিড় বাজারে।শৈলেন সরকার।
দুপুর পেরোতে না পেরোতেই উপচে পড়ছে দোকান। শনি-রবিবার ঢোকায় দায় বাজারে। সামনের রাস্তা দিয়ে ভিড় ঠেলে কোনও রকমে হাঁটতে গিয়ে দিব্যি মালুম হচ্ছে, পুজো আসতে আর দু’সপ্তাহ।
এই রোদ তো এই বৃষ্টি গত কয়েক দিন ধরে আবহাওয়া চলছে এমনই। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জি টি রোড লাগোয়া আসানসোল বাজার এলাকা এখন সারা দিনই গমগমে। কলেজ ফেরত তরুণী থেকে বাড়ির গিন্নি, সবারই নজর এখন পুজোর ফ্যাশনে। ব্যবসায়ীরা জানান, রাত বাড়লে বাস ও যানবাহনের সংখ্যা কমে যায়। তার উপরে মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি নামছে। এ বার তাই দিনেদুপুরেই বাজার সেরে রাখছেন শহরবাসী।
বন্ধুদের সঙ্গে পুজোর কেনাকাটায় বেরিয়েছিলেন সদ্য এমএ পাশ করা স্বর্ণালী দত্ত। এক ফাঁকে জানালেন, গত বার দেরি করে বাজার করে খুব মুশকিলে হয়েছিল। এ বার তাই তাড়াতাড়ি সেরে ফেলছেন। কী পছন্দ জানতে চাইলে এক গাল হেসে বলেন, “পুজো মানেই তো নিত্যনতুন ফ্যাশান। হাল ফ্যাশনের কিছু একটা নেব।” স্বর্ণালীর কথায় একমত শহরের একটি অভিজাত বস্ত্র বিপণীর কর্ণধার বিমল নেহারিয়াও। কমবয়সীদের ফ্যাশান নিয়ে তিনি জানান, লম্বা ঝুলের চুড়িদারই মেয়েরা বেশি পছন্দ করছেন। তালিকায় রয়েছে আনারকলিও। এ ছাড়া পশ্চিমি ধাঁচের পালাজো, উজ্জ্বল রঙের গোড়ালি পর্যন্ত ঝুলের প্যান্ট তো রয়েছেই। শপিংমল থেকে সাধারণ দোকান, সর্বত্রই এক ছবি।
শাড়ির বাজারে দক্ষিণী সিল্কের কদরই সবচেয়ে বেশি বলে জানালেন অভিজাত বস্ত্র ব্যবসায়ী ভক্ত দত্ত। দোকানে এসেই মঙ্গলগিরি, ভেঙ্কটগিরি, এর্নাকুলাম থেকে ওপারা সিল্ক খুঁজছেন কুড়ি থেকে ষাট সবাই। চাহিদা রয়েছে ফুলকারি সিল্কেরও। আসলে শাড়ি ছাড়া দুর্গাপুজোর সাজ যেন অসম্পূর্ণ। ভক্তবাবু বলেন, “ভিড় সামলাতে বাড়তি লোক রেখেছি। তাতেও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।” পুরুষদের ফ্যাশানে এ বারও ক্যাজুয়াল পোশাকের বিক্রিই বেশি। জিনস, টি-শার্ট আর ডিজাইনার শার্টের চলই বেশি রয়েছে বলে জানালেন আসানসোলের একটি শপিং মলের ম্যনেজার বিশাল মলহোত্রা। রকমারি পোশাক রয়েছে ছোটদের জন্যও। আসানসোলের একটি নামী ছোটদের পোশাক বিপণীর কর্ণধার নবীন জৈন জানান, ছোটদের পোশাকেও বড়দের মতো শর্ট টি-শার্ট, নেটের জামার চাহিদা রয়েছে। এছাড়া বরাবরের মতো বাবু ড্রেস, শেরওয়ানি, আফগানি তো আছেই।
এক কথায় বৃষ্টি, যানজট, দৈনন্দিনের একঘেয়েমি কাটিয়ে জমে উঠছে পুজোর বাজার। ঢোকা-বেরোনোর পথে ক্রেতাদের ব্যাগ পরীক্ষা করতে করতে হাঁফিয়ে উঠছেন নিরাপত্তারক্ষীরাও। তবে মুখের হাসি সরছে না। আর যে দু’সপ্তাহ।