বন্ধ বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র, শহরের রাস্তায় জমছে আবর্জনা

কোথাও খোলা মাঠে আবার কোথাও বা নিকাশি নালায় আবর্জনা ভর্তি ব্যাগ ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে। কোথাও বা আবার রাস্তার উপরেই আবর্জনা ছড়িয়ে রয়েছে। পুরসভার বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র বন্ধের পর এমন ছবিটাই দস্তুর হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। পুরসভার তরফে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুর্গন্ধ ও মাশা-মাছির উপদ্রবে টেকা দায় পড়ছে বলেও অভিযোগ শহরের বাসিন্দাদের একাংশের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০১:৪১
Share:

বেনাচিতি গুরুদুয়ারা রোডের পাশেই জমা আবর্জনার স্তুপ। —নিজস্ব চিত্র।

কোথাও খোলা মাঠে আবার কোথাও বা নিকাশি নালায় আবর্জনা ভর্তি ব্যাগ ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে। কোথাও বা আবার রাস্তার উপরেই আবর্জনা ছড়িয়ে রয়েছে। পুরসভার বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র বন্ধের পর এমন ছবিটাই দস্তুর হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। পুরসভার তরফে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুর্গন্ধ ও মাশা-মাছির উপদ্রবে টেকা দায় পড়ছে বলেও অভিযোগ শহরের বাসিন্দাদের একাংশের।

Advertisement

কেন্দ্রীয় জওহরলাল নেহেরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশন (জেএনএনইউআরএম) প্রকল্পের আর্থিক বরাদ্দে ও একটি বেসরকারি সংস্থার লগ্নিতে ২০১০ সালে দুর্গাপুরের শঙ্করপুরে কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি গড়ে ওঠে। কিন্তু প্রায় বছর দুয়েক ধরে কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে থাকায় শুরু হয় বিপত্তি। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কেন্দ্রটি চালানোর জন্য যে পরিমাণ আবর্জনার প্রয়োজন, তা মিলছিল না। ফলে সেটি বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। এরপর শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে আবর্জনা তুলে ভগত্‌ সিংহ ক্রীড়াঙ্গনের পাশে ফেলা হতে থাকে। ওই মাঠটিকে কার্যত ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ডে’ পরিণত করে পুরসভা। কিন্তু ওই ঘটনায় শহর জুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের আঁচ করে ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে রাতুড়িয়া এলাকার একটি বেসরকারি ওষুধ তৈরির কারখানার পাশে আবর্জনা জমা করতে শুরু করে পুরসভা। কিন্তু তার জেরে ওই এলাকাতেও ব্যাপক দুর্গন্ধ ও মশা মাছির উপদ্রব শুরু হয়। বর্জ্যের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই এলাকায় কোনও আবর্জনা ফেলতে দেওয়া হবে না বলে পুরসভাকে জানিয়ে দেন বাসিন্দারা।

এরপর থেকেই শহরের ভগত্‌ সিংহ ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন এলাকা, দুর্গাপুর কেমিক্যালসের পাশের মাঠ-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনা জমা হতে শুরু করে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, প্রতিদিন এলাকা থেকে আবর্জনা তুলতে পুরসভার গাড়ির দেখাও মেলে না। শহরবাসীর অভিযোগ, প্রায় দু’বছর পেরিয়ে গেলেও আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট কোনও জায়গা ঠিক করতে পারেনি পুরসভা। শহরের একটু ভিতরের এলাকাগুলি, বিশেষ করে বেনাচিতি লাগোয়া অঞ্চলগুলিতে গেলেই দেখা যায়, আবর্জনার ভ্যাট উপচে পড়ছে। এমনকী বেনাচিতির গুরুদুয়ারা রোড এলাকায় রাস্তা জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছে আবর্জনা। শুধু তাই নয় কুকুর, বেড়াল আবর্জনা মুখে করে দূষণ ছড়াচ্ছে গোটা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা পামেলা কউর, পরমজিত্‌ সিংহ’রা বলেন, “এলাকাতে আবর্জনা তোলার জন্য পুরসভার গাড়ির দেখাও মেলে না নিয়মিত। ফলে এলাকায় আবর্জনার স্তুপ গজিয়ে উঠেছে।” বাসিন্দাদের দাবি, নিয়মিত জঞ্জাল সাফাইয়ে নামুক পুরসভা। ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধায় বাসিন্দাদের অভিযোগের কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়ে বলেন, “সমস্যা সমাধানে দ্রুত চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি যাতে চালু করা যায়, তার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন