বর্ষা এলেই আলসে দুপুরে খিচুড়ি ইলিশমাছ ভাজা ছাড়া বাঙালির রসনা তৃপ্ত হয় না। আর তার সঙ্গেই জুটি বেঁধে আসে জ্বর, পেটের রোগ। বিশেষত বয়স্ক বা শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনায় কম হওয়ায় সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ, কিছু বিশেষ সাবধানতা মেনে চললে জলবাহিত রোগ থেকে অনেকটাই রেহাই মিলবে।
বর্ষায় বৃষ্টির জলে নিকাশি নালা উপচে পড়া তো লেগেই থাকে। সেই নোংরা জলই কখনও পানীয় জল সরবরাহের পাইপ লাইনের ফুটো দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ে। কখনও টিউবওয়েল ডুবে যায় বৃষ্টির জলে। ফলে নানা ধরণের জলবাহিত রোগের উপসর্গ দেখা যায়। যেমন, আমাশা, জন্ডিস, রক্ত আমাশা বেশি হয়। এ ছাড়া ভাইরাসের সংক্রমণে জ্বর, খিঁচুনি, চুলকানি, বমি দেখা দিতে পারে। বাড়ে সর্দি-কাশি-ব্যাথার প্রকোপও। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ, শাক-সব্জি বাজার থেকে কিনে আনার পরে ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে।
দুর্গাপুরের চিকিৎসক শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বর্ষায় জল ফুটিয়ে খেতে পারলে ভাল। তবে ভাল ফিল্টার অনেকটাই বিপদ কাটায়। আর দু’টোর কোনওটাই সম্ভব না হলে জলে পরিশোধক দিয়ে খেতে হবে। নজর দিতে হবে খাওয়া-দাওয়ার দিকেও। সবুজ সব্জি বেশি খেতে হবে। মাছ-মাংসও খেলেও পরিমাণ অল্প হওয়ায় ভাল। শ্যামাপ্রসাদবাবু বলেন, “এ সময় কেনা খাবার যত কম খাওয়া যায় তত ভাল।” চিকিৎসক যোশি কে আনন্দের মতে, বর্ষায় আগে আক্রান্ত হয় শিশুরা। তাই বাড়ির খুদেটিকে ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে বাইরে থেকে এলেই ভাল করে হাত-পা ধুয়ে দিতে হবে। জামাকাপড়ের ক্ষেত্রে হাল্কা সুতির জামাই ভাল। ঘাম বেশি হলে মুছে, শুকিয়ে নিতে হবে। নাহলে ঘাম বসে গিয়ে সর্দি, কাশি, জ্বর হতে পারে। তিনি জানান, এই সময় ভাইরাল ইনফেকশন থেকেও জ্বর আসতে পারে। দেহের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে ওষুধ খেতে হবে। তবে তার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভাল।