ভাঙা পড়বে স্কুল, বিকল্প জায়গা না মেলায় বিপাক

একটা ঘরের মধ্যে তিনটি শ্রেণির পড়াশোনা। সেখানে অফিস। মিড-ডে মিলের গুদাম। গত কুড়ি বছর ধরে ২১৬ বর্গফুটের সেই ঘরে চলছে কুলটির ডুবুরডিহি প্রাথমিক স্কুল। এর মধ্যে আবার জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য স্কুলটি ইতিমধ্যে ভেঙে ফেলার নোটিস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার বদলে নতুন স্কুল কোথায় হবে, সে ব্যাপারে অন্ধকারে শিক্ষক থেকে অভিভাবক সকলেই। স্পষ্ট উত্তর নেই প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কাছেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কুলটি শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৩২
Share:

ডুবুরডিহির সেই স্কুল। নিজস্ব চিত্র।

একটা ঘরের মধ্যে তিনটি শ্রেণির পড়াশোনা। সেখানে অফিস। মিড-ডে মিলের গুদাম। গত কুড়ি বছর ধরে ২১৬ বর্গফুটের সেই ঘরে চলছে কুলটির ডুবুরডিহি প্রাথমিক স্কুল। এর মধ্যে আবার জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য স্কুলটি ইতিমধ্যে ভেঙে ফেলার নোটিস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার বদলে নতুন স্কুল কোথায় হবে, সে ব্যাপারে অন্ধকারে শিক্ষক থেকে অভিভাবক সকলেই। স্পষ্ট উত্তর নেই প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কাছেও।

Advertisement

কুলটি পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে স্কুলটি। রামনগর গ্রাম ছাড়িয়ে কল্যাণেশ্বরী যাওয়ার পথে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া এই স্কুলে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে আসে। ২৮ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য শিক্ষক রয়েছেন দু’জন। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নানা সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা। একটি মাত্র ছোট ঘর। তারই এক কোণে টেবিল-চেয়ার পেতে অফিস তৈরি করা হয়েছে। উল্টো প্রান্তের কোণে মজুত মিড-ডে মিলের চাল, বাসনপত্র, ঘুঁটে-কয়লা ইত্যাদি। ঘরের মাঝখানের অংশে চটের উপরে বসে পড়ুয়ারা। প্রায় দমবন্ধ করা পরিবেশে চলছে পড়াশোনা।

শিক্ষকেরা জানান, ছোট ঘরের তিন ভাগের এক ভাগ অংশে বসাতে হচ্ছে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের। কেউ কারও কথা ঠিক ভাবে শুনতে পায় না। তাঁদের অভিযোগ, এ ভাবে পড়াশোনা হয় না। দেখা গেল, স্কুল থেকে শ’খানেক মিটার দূরে রামনগর কোলিয়ারি। কয়লার গুঁড়ো ও কালো ধুলোয় ঢেকে গিয়েছে চারপাশ। স্কুলের মেঝেতেও কয়লা গুঁড়োর পুরু আস্তরণ। পাশের একটি ক্লাবঘরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিড-ডে মিল রান্না হচ্ছে। ধুলোর উপরে বসেই ছাত্রছাত্রীদের তা খেতে হচ্ছে।

Advertisement

তবে আরও বড় সমস্যা রয়েছে। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ স্কুলটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। স্কুলকে সে কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত রায় জানান, ২০ বছর আগে স্কুলটি জাতীয় সড়কের জায়গায় তৈরি হয়েছিল। এখন ২ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ হচ্ছে। তাই স্কুলটি ভাঙা পড়বে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কুলটি শিক্ষা চক্রের পরিদর্শক নুর আলি বলেন, “আমাদের কাছে খবর পাঠানো হয়েছে। আমরা জমির খোঁজ করছি। পেলেই সেখানে ভবন তৈরি করে চলে যাব।”

প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের এক আধিকারিক অবশ্য দাবি করেন, তাঁরা ইতিমধ্যে আশপাশের এলাকায় খোঁজ শুরু করেছেন। কিন্তু কোথাও জমি পাওয়া যাচ্ছে না। এলাকার মানুষজনকেও বিষয়টি তাঁরা জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি এখনও মেলেনি। স্কুল ভবন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় জমি যে মিলছে না, তা স্বীকার করেছেন স্কুল পরিদর্শক নুর আলিও। কুলটির তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় জানান, তাঁর এই বিষয়ে কিছু জানা নেই। তবে আবেদন এলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন