ভর্তি তালিকায় কারচুপির অভিযোগ টিএমসিপির

কালনা কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়ায় কারচুপির অভিযোগ তুলল টিএমসিপি। বৃহস্পতিবার ছাত্র সংসদের একটি প্রতিনিধি দল অধ্যক্ষকে অভিযোগ জানিয়ে তিন পাতার একটি রিপোর্ট জমা দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৪ ০০:৪৮
Share:

সুনসান কালনা কলেজ চত্বর।—নিজস্ব চিত্র।

কালনা কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়ায় কারচুপির অভিযোগ তুলল টিএমসিপি। বৃহস্পতিবার ছাত্র সংসদের একটি প্রতিনিধি দল অধ্যক্ষকে অভিযোগ জানিয়ে তিন পাতার একটি রিপোর্ট জমা দেয়। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ মাসের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কলেজকে জানানো হয় যে পুরনো নিয়ম মেনেই ভর্তি হবে। সেই মতো শহরের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখা থেকে অনার্সের ফর্ম বিলি ও জমা নেওয়ার কাজ শুরু হয়। সেখান থেকে ফর্মগুলি আসে কলেজে। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, উচ্চমাধ্যমিকে পাঁচটি বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর ও আবেদনকারী যে বিষয়ে অনার্স নিতে ইচ্ছুক তা যোগ করে সেই নম্বরের ভিত্তিতে মেধাতালিকা তৈরি হয়। এছাড়া পদার্থবিদ্যা ও রসায়নে আবেদনকারীদের অন্তত ৫০ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে বলেও জানানো হয়।

প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশিত হয় ২৪ জুন। তারপরেই বিপত্তি ঘটে। ইতিহাস অনার্সের মেধাতালিকায় ছাত্রছাত্রীরা দেখেন, কৃষ্ণেন্দু ঘোষ নামে এক ছাত্র ৬০৩ পেয়েছে। অথচ উচ্চমাধ্যমিকের নম্বর ও ইচ্ছুক বিষয়ের মোট নম্বরই ৬০০। আবার সেকাল মণ্ডল নামে সংস্কৃত অনার্সে আবেদনকারী এক ছাত্রের মেধাতালিকার হিসেবে প্রাপ্ত নম্বর ৪৩০। অথচ তার চেয়ে কম নম্বর পেয়ে অনেকের মেধাতালিকায় নাম রয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়াতেই আসরে নামে টিএমসিপি। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ সংসদের একটি প্রতিনিধি দল ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করে। অভিযোগও জমা দেয়। তাঁদের দাবি, ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রথম মেধাতালিকায় বেশ কিছু কারচুপি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কলেজে কাউন্সিলিং চালু থাকলেও কালনায় না থাকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। এছাড়া ছাত্র সংসদের কাছে মেধাতালিকা গোপন রাখা হয়েছে বলেও তাদের দাবি। সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর মাহাতোর অভিযোগ, “ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি নিয়ে উদাসীন কলেজ কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি করছি।” বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ও সংগঠনের রাজ্য নেতাদেরও বিষয়টি জানানো হবে বলে তাঁর দাবি।

কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ অভিযোগ মানতে নারাজ। অধ্যক্ষ দীপঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, “টাইপ করায় ভুল হওয়ায় এখনও পর্যন্ত ১০ জনের ক্ষেত্রে ভুল ধরা পড়েছে। সংশোধনের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। সন্ধ্যার মধ্যে ফের মেধাতালিকা প্রকাশেরও আশ্বাস দেন তিনি।” তাঁর দাবি, কলেজে বর্তমানে ১২ জন কর্মীর অভাব রয়েছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়েও এই সময় পরীক্ষা চলছে। কম সময়ে স্বল্প লোক নিয়ে কাজ করতেই একটু ভুল হয়ে গিয়েছে। এছাড়া কোনও গরমিল চোখে পড়লে পড়ুয়াদের সরাসরি কলেজে যোগাযোগ করার কথাও বলেন তিনি।

অধ্যক্ষ জানান, ২৮ জুন পর্যন্ত প্রথম তালিকার ভিত্তিতে ভর্তি চলবে। ৩০ জুন দ্বিতীয় তালিকা বের হবে। সেই তালিকায় যাতে ত্রুটি না থাকে তা দেখতে বাড়তি নজরদারি চালানো হবে।

কিন্তু প্রথম মেধাতালিকায় নাম থাকা উচিত ছিল অথচ পরে তা জানা গিয়েছে এমন কারও ক্ষেত্রে কী হবে? অধ্যক্ষের আশ্বাস, “এরকম হলে ওই পড়ুয়া পাস কোর্সে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন। পরে আসন খালি হলে অনার্সে নিয়ে নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন