এই বেড়া নিয়েই বিবাদ।—নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির সামনে বাঁশের বেড়া দিয়ে যাতায়াতের পথ আটকে দিয়েছে ক্লাবের সদস্যেরাকাটোয়া থানায় এমনই অভিযোগ করলেন দাঁইহাটের বকুলতলার এক বাসিন্দা। মায়ারানি মোদক নামে ওই মহিলার আরও অভিযোগ, ক্লাবের সদস্যেরা তৃণমূল সমর্থক বলে বিষয়টিতে নজর দিচ্ছে না পুলিশও। পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়েছে। আর দাঁইহাটের তৃণমূল নেতারাও জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁরা জানেন। শীঘ্র সমস্যা মিটিয়ে ফেলা হবে।
ঘটনার সূত্রপাত প্রায় তিন বছর আগে। তখন তাঁর বাড়ির সামনের সরকারি জমিতে ক্লাবঘর তৈরিতে বাধা দেওয়ায় তাঁকে ও তাঁর ছেলেমেয়েদের মারধর করা হয়েছে বলে কাটোয়া থানায় অভিযোগ করেছিলেন মায়ারানিদেবী। বেশ কয়েকজনের নামে শ্লীলতাহানির অভিযোগও করেন। ওই অভিযোগের প্রতিলিপি মুখ্যমন্ত্রী, মহিলা কমিশন থেকে শুরু করে জেলার পুলিশ কর্তাদের কাছেও পাঠান তিনি। বছরখানেক আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে ঠিক হয়, মায়ারানিদেবীর বাড়ির সামনে থেকে ক্লাবঘরটি সরিয়ে দেওয়া হবে। পরিবর্তে ফৌজদারি মামলাটি তুলে নেবেন তিনি। সেই মতো ক্লাব সদস্যেরা ওই অস্থায়ী ক্লাবটির জায়গা বদলে রাস্তার পাশে নিয়ে যান। তবে মামলাটি তোলেন নি মায়াদেবী। তাঁর অভিযোগ, “মামলা তুলে নিতে চাপ দেওয়ার জন্যই সপ্তাহ দুয়েক আগে আমার বাড়ির সামনে বেড়া দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “ওই দিন অন্যায় ভাবে আমাকে মারধর করা হয়েছিল। তাই মামলা তোলার প্রশ্নই নেই।” সবটা জানানোর পরেও পুলিশ বা পুরসভা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে তাঁর দাবি।
দাঁইহাট শহরের কাজিপাড়ায় একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্নার কাজ করেন মায়াদেবী। তাঁর অভিযোগ, মন্তেশ্বর-দাঁইহাট রোডের উপর বকুলতলায় বাড়ির সামনে দোকান ঘর তৈরি করে ভাড়া দিয়েছেন তিনি। কিন্তু বেড়া টপকে দোকানের সামনে গাড়ি রাখা যাচ্ছে না। ফলে বিক্রি কমে গিয়েছে বলেও তাঁর দাবি। তাছাড়া ক্লাবের ছেলেরা অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে বলেও মায়াদেবীর অভিযোগ। তিনি বলেন, “দুই মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে থাকাটাই ভয়ের হয়ে দাঁড়াচ্ছে।”
তবে ওই ক্লাবের কর্তা স্বপন সরকার, তপন সরকারদের দাবি, “আমরা কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত নই। ওই মহিলা আমাদের নামে যে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন, তা তুলে নিলে আমরাও বেড়া ভেঙে দেব।” তবে ক্লাব সদস্যরা কোনও রাজনৈতিক দলের যুক্ত নন বললেও শহর তৃণমূলের নেতারা স্বীকার করে নিয়েছেন, ওই ক্লাবের সদস্যেরা তাঁদের ঘনিষ্ঠ। দাঁইহাটের তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বাধীনা নন্দীর বাড়িতে বসে শহরের তৃণমূল সভাপতি রঞ্জিত সাহা বলেন, “ওই ভদ্রমহিলা আমাদের কাছে এসেছিলেন। ক্লাব কর্তাদের ডেকে পাঠিয়ে বেড়া ভেঙে দেওয়ার জন্য বলছি।”