শিবপুরে ভাঙা ইভিএম।—নিজস্ব চিত্র।
ইভিএম ভাঙচুর। ভোট দিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে ভোটারের মৃত্যু। মারধর, গালাগালি থেকে বুথে এজেন্ট বসতে না দেওয়াদিনভর এই সব অভিযোগের আবহেই উপ-নির্বাচন মিটল গলসি বিধানসভায়।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখা তেমন মেলেনি। বুথের দায়িত্বে ছিলেন রাজ্য পুলিশের কর্মীরাই। দু’একটি বুথে আবার সশস্ত্র পুলিশও ছিল না। দু’এক জায়গায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়। বুদবুদের নারায়ণপুর হাইস্কুল বুথে সিপিএম-তৃণমূলের সংঘর্ষে দু’পক্ষের পাঁচ জন জখম হন। কাঁকসার তেলিপাড়ায় সংঘর্ষে দু’দলেরই তিন জন করে জখম হন বলে অভিযোগ। সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূলের পক্ষ নিয়ে কয়েক জন বহিরাগত এ দিন বুথের কাছে রিগিংয়ের মিথ্যা অভিযোগ তুললে অশান্তি শুরু হয়। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা হঠিয়ে দিলে তারা বাইরে গিয়ে সিপিএমের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ।
দুপুরে ইভিএম খারাপ হওয়ায় ভোটগ্রহণ ঘণ্টাখানেক স্থগিত ছিল পানাগড় হিন্দি হাইস্কুলে। গলসির ১২ নম্বর বুথে ইভিএমের সব ভোট ফরওয়ার্ড ব্লকের ঘরে পড়ছে বলে অভিযোগ তোলে তৃণমূল। ইভিএম বদলে ফের ভোট শুরু হয়। সকাল ১০টা নাগাদ শিবপুরের কৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকে কয়েক জন দুষ্কৃতী ইভিএম ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। প্রিসাইডিং অফিসার সুমন চৌধুরী জানান, ৮৩৭ জন ভোটারের মধ্যে ২৬০ জন ভোট দিয়ে দিয়েছিলেন তখন। হঠাৎ কয়েক জন জোর করে ঢুকে ইভিএমটি ভেঙে দেয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছন পর্যবেক্ষক সতীশ কুমার। এর পরেই নতুন ইভিএম নিয়ে এসে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। সিপিএমের কাঁকসার নেতা বীরেশ্বর মণ্ডলের অভিযোগ, “আমাদের সমর্থকেরা ভোট দিতে গেলে তৃণমূলের বোতাম টেপার জন্য জোর করা হয়। তাঁরা প্রতিবাদ করায় দুষ্কৃতীরা ইভিএম ভেঙে দেয়।” তৃণমূল যদিও এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগের কথা মানেনি। নতুনগ্রাম, তেলিপাড়া, নিমটিকুড়ি গ্রামেও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা নাগাদ কাঁকসা হাইস্কুলে ভোট দিতে আসেন এই বিধানসভা কেন্দ্রে গত বার ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে জয়ী তথা এ বার বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল প্রার্থী সুনীল মণ্ডল। সেই সময়ে সিপিএম সমর্থকেরা তাঁকে গালিগালাজ করতে থাকেন বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তৃণমূলের তরফে এক সিপিএম সমর্থকের নামে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান তৃণমূলের কাঁকসা ব্লক যুব সভাপতি পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন পানাগড় গ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে ভোট দেওয়ার সময় এক প্রৌঢ় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে রাজবাঁধের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম বাবুভাই প্যাটেল (৬৪)। বাড়ি পানাগড় গ্রামে।