মন্ত্রী না থাকায় উন্নয়নের গতি কি কমবে, ধন্দে শহর

রাজ্যে বিধানসভা গঠন হওয়ার পর থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এই শহরের কেউ মন্ত্রী হননি। তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে প্রথম মন্ত্রী পেয়েছিল আসানসোল। শুরুতে আইনমন্ত্রী, পরে কৃষিমন্ত্রীর পদ পান আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটক।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৪ ০০:৫৬
Share:

রাস্তায় বাস রেখে বিক্ষোভ। আসানসোলে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি।

রাজ্যে বিধানসভা গঠন হওয়ার পর থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এই শহরের কেউ মন্ত্রী হননি। তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে প্রথম মন্ত্রী পেয়েছিল আসানসোল। শুরুতে আইনমন্ত্রী, পরে কৃষিমন্ত্রীর পদ পান আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটক। প্রথম বারের মতো সরাসরি কোনও মন্ত্রীর কাছে দাবিদাওয়া জানানোর সুযোগ পেয়েছিলেন শহরবাসী। গত তিন বছরে শহরকে কেন্দ্র করে যতটা যা উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে, এর পরে তা জারি থাকবে কি না, সোমবার মলয়বাবু মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ায় এখন তাই সে নিয়েই আশঙ্কায় শহরের অনেকে।

Advertisement

শহরে নানা পেশার সঙ্গে যুক্ত ও নানা বয়সের বেশ কিছু বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছরে আসানসোলকে ঘিরে যে সব কাজকর্ম হয়েছে, শহরে এক মন্ত্রী থাকায় তা ত্বরান্বিত হয়েছে বলে তাঁদের ধারণা। অনেকেরই দাবি, এক সময়ে যেখানে শহরকে ঘিরে তেমন কোনও বড় উদ্যোগ সে ভাবে হচ্ছিল না, গত তিন বছরে সেখানে অনেক নতুন নতুন কাজ হয়েছে। যেমন, এই শহরে রাজ্যের প্রথম মহিলা থানা তৈরি, স্টেডিয়ামের উন্নয়ন, কুলটিতে তিনটি ব্লকের জন্য পৃথক রেজিস্ট্রি অফিস তৈরি, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় গঠন, আইটি হাব ও মাইনরিটি হাব তৈরির উদ্যোগ, আসানসোলে একটি পৃথক অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের (সিভিল ডিফেন্স) শাখা গঠন ও ভবন নির্মাণ ইত্যাদি।

ভোটে বিপর্যয়ের কারণে দলের কাউকে শাস্তি বা কারও ইস্তফা রাজনৈতিক দলের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। কিন্তু তাতে উন্নয়নের কাজে কোনও প্রভাব পড়বে কি না, সে নিয়েই তাঁরা চিন্তায় বলে শহরের বহু বাসিন্দার দাবি। শহরের চিকিত্‌সক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “এখানকার মহকুমা হাসপাতালটিকে এক ধাক্কায় জেলা হাসপাতালে উন্নীত করার জন্য সরকারের কাছে মলয়বাবুর মাধ্যমে সরাসরি দাবি জানানো সম্ভব হয়েছিল। এলাকায় কোনও মন্ত্রী থাকা তো এ জন্যই সুবিধার।”

Advertisement

শহরের আইনজীবী মিতা মজুমদারের কথায়, “মলয়বাবু আইনমন্ত্রী থাকার সময়ে আইনজীবীদের দাবি মেনে এখানে একটি সিবিআই আদালত তৈরির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে তদ্বির করেছিলেন। সেই আদালত তৈরি হওয়ায় এখানকার আইনজীবীদের অনেক সুবিধা হয়েছে।” গত কয়েক দশকে যেখানে আসানসোলে কোনও সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি, সেখানে রাজ্যে ক্ষমতার হাতবদলের পরেই আসানসোলে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির পিছনে এলাকার মন্ত্রীর হাত ছিল বলে অনুমান ইংরেজি অনার্সের ছাত্র ইন্দ্রজিত্‌ ঘোষ, কলেজ শিক্ষক শৌভিক সাধুদের। ইন্দ্রজিত্‌ বলেন, “আসানসোলে একটি আইন কলেজ তৈরির কথা জানিয়েছিলেন মন্ত্রী। তা কি আর হবে? বুঝতে পারছি না।’’

মলয়বাবু মঙ্গলবার শহরে ছিলেন না। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। শহর মন্ত্রী হারানোয় উন্নয়নমূলক কাজকর্মে কোনও প্রভাব পড়বে কি না, আসানসোলের কোনও তৃণমূল নেতাই এ প্রশ্নে মুখ খুলতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন