মন্ত্রীর আশ্বাসই সার, হয়নি সেতু

প্রায় তিন বছর আগে মন্ত্রীর আশ্বাস দিয়েছিলেন নতুন সেতু তৈরি হবে। কিন্তু সেই সেতু তো দূর অস্ত্, দুর্গাপুর স্টেশনে যাওয়ার প্রধান ভরসা পুরনো গ্যামন ব্রিজ সেতুটিও উপযুক্ত সংস্কারের অভাবে বেহাল। আর তার জেরে বিপাকে পড়েছেন দুর্গাপুরের বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৩৪
Share:

বেহাল পুরনো সেতু।—নিজস্ব চিত্র।

প্রায় তিন বছর আগে মন্ত্রীর আশ্বাস দিয়েছিলেন নতুন সেতু তৈরি হবে। কিন্তু সেই সেতু তো দূর অস্ত্, দুর্গাপুর স্টেশনে যাওয়ার প্রধান ভরসা পুরনো গ্যামন ব্রিজ সেতুটিও উপযুক্ত সংস্কারের অভাবে বেহাল। আর তার জেরে বিপাকে পড়েছেন দুর্গাপুরের বাসিন্দারা।

Advertisement

এই সেতুটি দিয়েই বেনাচিতি, ইস্পাত নগরী, সিটি সেন্টার প্রভৃতি এলাকা থেকে মানুষ দুর্গাপুর স্টেশনে যাতায়াত করেন। তাছাড়া ডিপিএল কলোনি, শ্যামপুর, নডিহা, বীরভানপুর, অঙ্গদপুর, ডিভিসি ব্যারাজ ইত্যাদি এলাকার মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও সেতুটি ব্যবহার করা হয়। সেতুটি ব্যবহার করলে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে বাঁকুড়া ও দক্ষিণবঙ্গের একাংশের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগও সহজ হয়ে যায় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। অথচ, নিয়মিত সংস্কারের অভাবে সেতুটির কংক্রিটের রাস্তায় ক্ষয় ধরেছে। মাঝে মাঝে পিচের আস্তরণ দিয়ে শুধুমাত্র সাময়িক সংস্কারের চেষ্টা করা হয় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। এর জেরে সেতুর নীচের কংক্রিটের কাঠামোতেও ক্ষয় ধরেছে বলে অভিযোগ। সেতুর এক দিকে থাকা ফুটপাথেরও বিভিন্ন জায়গায় কংক্রিটের ঢাকানা ও রেলিং ভেঙে গিয়েছে। ডিপিএল নিউ বয়েজ হাইস্কুল থেকে সেতুু পেরিয়ে ব্যাঙ্কের কাজে যাওয়া একদল পড়ুয়ার অভিযোগ, ফুটপাথের বেহাল দশা। অন্যমনস্ক হয়ে গেলেই বিপদ। সেতুটি দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন এমএএমসি কলোনির বাসিন্দা বিকাশ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “এই সেতুটি দিয়েই সপ্তাহে পাঁচদিন বাঁকুড়া যাই। আমূল সংস্কার না হলে সেতুটি আর ব্যবহার করা যাবে না।”

শহরের মধ্য দিয়ে যাওয়া হাওড়া-দিল্লি রেল লাইনের দু’পারে শহরের মধ্যে সংযোগ করতে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হয় এক লেনের সেতু। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ বাড়ায় ছয়ের দশকে তৈরি হয় নতুন সেতু। নির্মাণ-সংস্থা ‘গ্যামন’-এর নাম থেকে সেতুটি গ্যামন ব্রিজ হিসেবে পরিচিত হয়। দামোদরের দু’পারে দুর্গাপুর ও বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় নতুন নতুন শিল্প স্থাপনের ফলে সেতু দিয়ে যাতায়াতকারী ভারী লরি ও বাসের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। কিন্তু যানবাহনের চাপ বাড়লেও স্টেশন যাওয়ার প্রধান ভরসা গ্যামন ব্রিজের উপযুক্ত সংস্কার হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

Advertisement

২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ববি হাকিম আশ্বাস দেন, কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের জহরলাল নেহেরু আরবান রিনিউয়াল প্রকল্পে নতুন সেতু গড়া হবে। এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, বতর্মান সেতুর জায়গায় অতিরিক্ত বহন ক্ষমতা সম্পন্ন নতুন সেতু গড়ার জন্য বছর তিনেক আগে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন দফতরে বিস্তারিত পরিকল্পনা জমা দেওয়া হয়। যদিও শহরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় জানান, নতুন সেতু গড়ার ব্যাপারে কোনও অগ্রগতি হয়নি। সে কারণে সাময়িক সংস্কার কাজ করা হয়। নতুন সেতু না হওয়ার জন্য কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে অপূর্ববাবু বলেন, “কেন্দ্র সরকারের থেকে কোনও সাহায্য মেলেনি। কিছু সংস্কার হলেও নতুন সেতু গড়াই একমাত্র সমাধান।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন