রাস্তা নিয়ে দ্বন্দ্ব, বোমা ফেটে মৃত তৃণমূল কর্মী

পাড়ার রাস্তা তৈরি নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বোমাবাজিতে মৃত্যু হল এক তৃণমূল কর্মীর। মৃতের নাম শেখ রফিক আনসারি(৫১)। বাড়ি মেমারির বড়মশাগড়িয়া গ্রামে। আহত হয়েছেন এক জন। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে ২৫টি তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেমারি শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫৭
Share:

ভাঙচুর হওয়া বাড়ি।

পাড়ার রাস্তা তৈরি নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বোমাবাজিতে মৃত্যু হল এক তৃণমূল কর্মীর। মৃতের নাম শেখ রফিক আনসারি(৫১)। বাড়ি মেমারির বড়মশাগড়িয়া গ্রামে। আহত হয়েছেন এক জন। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে ২৫টি তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সরু একটা রাস্তা তৈরিকে কেন্দ্র করে এ দিন মেমারির বিধায়ক আবুল হাসেম মণ্ডল ও জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ, স্থানীয় তৃণমূল নেতা মহম্মদ ইসমাইলের গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ব্যাপক বোমাবাজি হয়। সেই বোমার আঘাতেই প্রাণ হারান রফিক আনসারি। তিনি বিধায়কের অনুগামী বলেই পরিচিত। ওই গোষ্ঠীরই আরেক অনুগামী গদাই মণ্ডলের ডান পা বোমার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছে। বুধবার দুপুরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের শয্যায় শুয়ে তিনি বলেন, “সকালে বড়মশাগোড়িয়ার একটি পাড়ার মধ্যেকার রাস্তা নির্মাণকে ঘিরে বচসা বাধে। পাড়ারই কিছু লোক রাস্তা গড়ার কাজ করছিল। ওই জায়গাটি খুব সরু বলে রাস্তা তৈরিতে আপত্তি করি আমরা। তারপরেই ইসমাইলের লোকেরা আমাদের লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়তে শুরু করে। রফিক মাঠের কাজ সেরে ফিরছিল। ওর মাথার পিছন দিকে বোমা লাগায় খুলি উড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রফিকের। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকেও বোমা মারা হয়।” তাঁর দাবি, “আমরা বিধায়কের অনুগামী। তাই ইসমাইলের লোকেদের কোপে পড়তে হয়েছে আমাদের।”

দুপুরে গ্রামে গিয়েও দেখা যায় পরিস্থিতি থমথমে। বেশ কিছু বাড়িতে ভাঙচুরের চিহ্নও রয়েছে। চারিদিকে মানুষের জটলা। কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ তাঁরা। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে তৃণমূল সমর্থক শেখ সামসুদ্দিন, আজাহার মণ্ডল, মিঠুন মল্লিকেরা বলেন, “এই গ্রামে আগেও একশো দিনের কাজ নিয়ে ইসমাইলের গোষ্ঠীর সঙ্গে বিধায়কের গোষ্ঠীর লড়াই হয়েছে। সেই ঘটনায় ইসমাইল সাহেব নিজেও প্রহৃত হন। তারপরে থেকেই ইসমাইলের লোকেরা হুমকি দিচ্ছিল। আগের গোলমালের প্রতিশোধ নিতেই এই ঘটনা ঘঠানো হয়েছে।”

Advertisement

আহত তৃণমূল কর্মী।

তবে জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধক্ষ্য তথা তৃণমূল নেতা শেখ ইসমাইলের দাবি, “আমি সারাদিন জেলা পরিষদেই ছিলাম। শুনতে পেলাম, একজনের জায়গা দখলের চেষ্টা করছে এক দল লোক। তার জেরেই সংঘর্ষ বাধে। একজন মারাও গিয়েছেন।” আর বিধায়ক গোষ্ঠীর উপ হামলা চালানোর অভিযোগ নিয়ে তাঁর সাফ জবাব, “ওই জায়গাটা মেমারির বিধায়ক দেখাশোনা করেন। আমি ওখানে যাই না।”

বিধায়ক আবুল হাসেম মণ্ডলও বলেন, “গ্রামে এক পরিবারের জায়গা অন্য একদল লোক দখল করে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল। তা নিয়ে কোনও সুরাহা এতদিন হয়নি। তার জেরেই সংঘর্ষ বেঁধেছে। এটা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ঘটনা।” তাঁর দাবি, “আমার লোকেরা মারামারি করেনি, তাদের কেউ মারাও যায়নি।”

এসপি জানিয়েছেন, নিহত ব্যক্তির মাথায় অন্যদের ছোঁড়া বোমা লাগেনি। তিনি নিজেই ওই বোমা ছুঁড়তে গিয়েছিলেন। সেই বোমা হাতে ফেটেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন