রাস্তার পাশে রাখা হয়েছে গাছের গুঁড়ি। ছবি: মধুমিতা মজুমদার।
রাস্তা দখল করে ব্যবসা করার জেরে কালনা শহরে ঢোকার মুখে বাড়ছে দুর্ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এসটিকেকে রাস্তার উপর দশ কিলোমিটার জুড়ে লিচুতলা, হাটকালনা, মালতিপুর, জিউধারা এলাকাগুলি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের তরফেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি বলে অভিযোগ।
জিউধারা এলাকা থেকে ধাত্রীগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত এসটিকেকে রাস্তার মাঝামাঝি জায়গায় রয়েছে কালনা শহরে ঢোকার রাস্তা। সারাদিন পর্যন্ত এই রাস্তা দিয়ে প্রচুর ভারী গাড়ি চলে। আদালত, স্কুল, হাসপাতাল সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে যাওয়ার জন্য সাধারণ মানুষ এই রাস্তাটিই ব্যবহার করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তার দু’ধার ঘেঁষে ফুটপাতেই গজিয়ে উঠেছে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। শুধু তাই নয়, ওই রাস্তার দশ কিলোমিটার জুড়েই ২০-টিরও বেশি কাঠ চেরাইয়ের মিল রয়েছে বলে জানান পথচারিরা। রাস্তা থেকে মিলের দূরত্ব বেশ কিছুটা হলেও অনেকেই রাস্তার গা ঘেঁষে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাখেন বলে অভিযোগ। এর জেরে ফুটপাত প্রায় লুপ্ত হতে বসেছে। বছর দেড়েক আগে জিউধারা এলাকায় স্থানীয় এক যুবককে একটি তেলের ট্যাঙ্ক গাছের গুঁড়ির গাদায় পিষে দেয় বলে জানা গেল। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের। উত্তেজিত জনতা তখন দাবি করে, রাস্তার পাশে কাঠের গুঁড়ি পড়ে না থাকলে হয়ত ওই দুর্ঘটনা আটকানো যেত। সম্প্রতি হাটকালনা এলাকার চামরাখটিতে রাস্তার পাশে এক মহিলাকে ধাক্কা মারে ম্যাটাডোর। হাটকালনা পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য বাপ্পা মজুমদার জানান, রাস্তার পাশে আলাদা করে কোনও ফুটপাত না থাকাতেই দুর্ঘটনা বাড়ছে। গত তিন মাসে ওই এলাকায় গাড়ির ধাক্কায় কালনা ১ ব্লক দফতরের এক রক্ষী সহ মোট ৬ জন জখম হয়েছেন। লিচুতলা এলাকার বাসিন্দা রমেশ দেবনাথ বলেন, “জনসংখ্যার চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তার পাশে ব্যবসা করার প্রবণতা বাড়ছে। দখলদারি উচ্ছেদে প্রশাসন কোনও ভূমিকা নেয় নি।”
শুধু কাঠ চেরাই মিল নয়, রাস্তার পাশে বাড়ি তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম, ধানের গোলাও রাখা হয় বলে অভিযোগ।
রাস্তার পাশে দখলদারি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কালনার মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ বলেন, “পুরো বিষয়টি নিয়ে পূর্ত দফতরের সড়ক বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।” পূর্ত দফতরের এক কর্তা যদিও জানান, সাধারণ মানুষের তরফে এখনও কোনও অভিযোগ মেলে নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।