চিকিৎসা শিবিরে ভিড় গ্রামবাসীদের। নিজস্ব চিত্র।
একসঙ্গে পেটের রোগ দেখা দিয়েছে প্রায় হাজার দেড়েক গ্রামবাসীর। শুক্রবার সংক্রমণ বাড়তে থাকার খবর পেয়ে রায়নার ২ ব্লকের ওই এলাকায় যান চিকিৎসকদের একটি দল। ডেপুটি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপনকুমার বন্দ্যোপাধ্যের দাবি, কোনও ভাবে জলবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন উচালন ও তার পাশের দুই গ্রামের বাসিন্দারা। এক জনকে স্থানীয় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তিও করানো হয়েছে।
এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের তরফে চারটি শিবির করা হয় গ্রামে। খণ্ডঘোষের গোপালবেড়িয়া ও মইধারা গ্রামের অসুস্থরাও এসে দেখিয়ে যান। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, আক্রান্তরা প্রত্যেকেই মাথা ব্যথা, একাধিবার বমি ও পায়খানার উপসর্গ নিয়ে এসেছিলেন। রায়না ২-এর বিএমওএইচ সঞ্জয় গুহ বলেন, “দেড় হাজার বাসিন্দা আক্রান্ত হয়েছিলেন। চিকিৎসা করার পর এখন সুস্থ রয়েছেন।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খণ্ডঘোষের গোপালবেড়া সংলগ্ন মোকড্ডুম পিরের মেলা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার মহোৎসবের আয়োজন করা হয়। সেখানেই আশপাশের প্রায় কুড়ি হাজার মানুষ খিচুড়ি খেয়েছিলেন বৃহস্পতিবার। সেখান থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে তাঁদের সন্দেহ। শুক্রবার স্বাস্থ্য শিবিরে এসে আক্রান্তেরা জানান, সন্ধ্যার পর থেকেই মাথা ব্যথা শুরু হয়। কারও কারও মাথা ঘুরতে শুরু করে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বমি ও পায়খানা বাড়তে থাকে। গ্রামের কোনও কোনও বাড়িতে সব সদস্যই জলবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। উচালন গ্রামের অচিন্ত্য রায়, রিঙ্কু সাঁতরারা বলেন, “খিচুড়ি খাওয়ার পর সন্ধে পর্যন্ত কোনও অসুবিধা হয়নি। তারপর থেকে মাথা ব্যথা শুরু হয়। রাতের খাবার খেতে ইচ্ছা করছিল না। বারবার শৌচাগার ঢুকেছি আর বেরিয়েছি। শরীর খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছে।” স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, ২০ হাজার লোকের জন্য গভীর রাত থেকে খিচুড়ি রান্না করে রেখে দেওয়া হয়। তারপরে ১০-১২ ঘন্টা পরে তা পরিবেশিত হয়। হঠাৎ করে গরম পড়ে যাওয়ায় রান্না করা খাবারে কোনও সমস্যা হয়ে থাকতে পারে বলেও তাঁদের দাবি। উদ্যোক্তারা যদিও এমন কিছু মেনতে চাননি। স্বাস্থ্য দফতরও এখনই এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, “ওই খাবারের নমুনা ও মলত্যাগের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে আসা হয়েছে। গবেষণাগারে পরীক্ষা করার পরই বলা যাবে কী কারণে এত মানুষ জলবাহিত রোগে আক্রান্ত হলেন।”