রকেট লঞ্চারের ইস্পাতের বরাত পেল এএসপি

দু’বছর আগে আইএনএস বিক্রান্তা। গত বছর আইএনএস কামার্টা। এ বার পিনাক রকেট লঞ্চার। দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি তৈরিতে ধারাবাহিক অবদান রেখে চলেছে দুর্গাপুরের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট (এএসপি)। এয়ারক্রাফট বহনকারী আইএনএস বিক্রান্ত-এর ফ্লাইট ডেক তৈরির জন্য বিশেষ ধরনের ইস্পাত তৈরি করেছিল এএসপি। একই ভাবে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি প্রথম অ্যান্টি সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কামার্টা তৈরিতে যে বিশেষ ইস্পাতের দরকার পড়েছিল, তৈরি করেছিল এই কারখানাই।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৫ ০২:২৫
Share:

দুর্গাপুরের কারখানা। —নিজস্ব চিত্র।

দু’বছর আগে আইএনএস বিক্রান্তা।

Advertisement

গত বছর আইএনএস কামার্টা।

এ বার পিনাক রকেট লঞ্চার।

Advertisement

দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি তৈরিতে ধারাবাহিক অবদান রেখে চলেছে দুর্গাপুরের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট (এএসপি)।

এয়ারক্রাফট বহনকারী আইএনএস বিক্রান্ত-এর ফ্লাইট ডেক তৈরির জন্য বিশেষ ধরনের ইস্পাত তৈরি করেছিল এএসপি। একই ভাবে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি প্রথম অ্যান্টি সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কামার্টা তৈরিতে যে বিশেষ ইস্পাতের দরকার পড়েছিল, তৈরি করেছিল এই কারখানাই। তারও আগে বোফর্স কামানের গোলা তৈরির জন্য বিশেষ ইস্পাতের জোগান দিয়েছে এএসপি। সম্প্রতি ‘পিনাক মাল্টি ব্যারাল রকেট লঞ্চার’ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ ফোর্জিং ইস্পাত ‘ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন’-এ (ডিআরডিও) সরবরাহ করল এএসপি।

পিনাক ক্ষেপনাস্ত্রের নকশা তৈরি হয় ১৯৮৬ সালে। তা আরও উন্নত করে তুলতে ডিআরডিও-র পুণের এক গবেষণাগারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে সে কাজ শেষ হয়। মাত্র ৪৪ সেকেন্ডের মধ্যে ১২টি রকেট ছুড়তে সক্ষম এই পিনাক লঞ্চার। স্বল্পপাল্লার এই ক্ষেপনাস্ত্র ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরবর্তী কোনও লক্ষ্য ভেদ করতে পারে। পাল্লা বাড়িয়ে ৬৫ কিলোমিটার করার কাজ চলছে। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধে পিনাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। তবে তা আরও কার্যকর ও উন্নত করে তুলতে বিশেষ ধরনের ইস্পাতের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন প্রতিরক্ষা দফতরের বিজ্ঞানীরা।

এএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিআরডিও-র একটি দল বছরখানেক আগে কারখানায় আসে। পরিকাঠামো ও কাজের পরিবেশ খতিয়ে দেখার পরে এএসপিকে ডিআরডিও-র বিজ্ঞানীদের নির্দেশ মতো বিশেষ ধরনের ইস্পাত তৈরির বরাত দেয়। এই কাজের জন্য এএসপি নিজস্ব একটি দল গড়ে। এর পরেই ইস্পাত তৈরির কাজ শুরু হয়। সম্প্রতি প্রথম দফার বরাত ডিআরডিও-তে পাঠিয়েছে এএসপি। ডিআরডিও তা অনুমোদন করে পাঠিয়ে দিয়েছে কানপুরের ‘ফিল্ড গান ফ্যাক্টরি’তে। এএসপি-র জনসংযোগ দফতরের ম্যানেজার এমএম নাথ বলেন, “মহাকাশ গবেষণা, নিউক্লিয়ার গবেষণার পাশাপাশি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও যথাসাধ্য অবদান রাখে এএসপি। সংস্থার এমন কৃতিত্বে গর্বিত কারখানার কর্মীরা।”

এএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থার আর্থিক হাল খুব একটা ভাল নয়। বছরখানেক আগে প্রায় এগারোশো কোটি টাকার আধুনিকীকরণ পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছে ইস্পাত মন্ত্রকের কাছে। তা এখনও অনুমোদিত হয়নি। কারখানার কর্মীরা জানান, বর্তমান পরিকাঠামোতেই দেশের বিভিন্ন প্রয়োজনে সাধ্যমতো অবদান রাখছে সংস্থা। তাঁদের মতে, আধুনিকীকরণ হলে কাজের আরও সুবিধা হবে, পরিকাঠামোর উন্নতি হবে। সেক্ষেত্রে বাড়বে উৎপাদিত সামগ্রীর উৎকর্ষতাও। কারখানার সিটু নেতা আরপি গঙ্গোপাধ্যায়, আইএনটিটিইউসি-র অশোক কুণ্ডুরা বলেন, “সংস্থার আধুনিকীকরণ জরুরি। তবে এই পরিস্থিতিতেও আমার যে গুণগত মানের ইস্পাত তৈরি করছি, তা রীতিমতো কৃতিত্বের।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন