শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিক্ষককে মার

ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এক শিক্ষককে স্কুলে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। বুধবার দুপুরে বর্ধমান থানার নাদরা গ্রামের জুনিয়র হাইস্কুলের ঘটনা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শিক্ষককে আটক করে। সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। ওই ছাত্রীর মায়ের দাবি, বেশ কিছুদিন ধরেই মেয়েটি মনমরা হয়ে থাকত। স্কুলেও যেতে চাইত না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:২৭
Share:

ধৃত শিক্ষক। নিজস্ব চিত্র।

ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এক শিক্ষককে স্কুলে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। বুধবার দুপুরে বর্ধমান থানার নাদরা গ্রামের জুনিয়র হাইস্কুলের ঘটনা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শিক্ষককে আটক করে। সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

Advertisement

ওই ছাত্রীর মায়ের দাবি, বেশ কিছুদিন ধরেই মেয়েটি মনমরা হয়ে থাকত। স্কুলেও যেতে চাইত না। পরে জোর করায় সে জানায় স্কুলের বাংলার শিক্ষক শান্তনু দাস তার শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করেছে। মেয়ের কথা শুনেই গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই শিক্ষক আগেও একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন। কিন্তু তখন বিষয়টির গুরুত্ব বোঝেন নি তাঁরা। স্কুলের বদনামও চাননি। কিন্তু আবারও ওই ছাত্রীর মুখে একইরকম অভিযোগ শুনে স্কুলে গিয়ে ভিড় জমান তাঁরা। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা শান্তনু দাসকে প্রথমে মারধর পরে আরও দুই শিক্ষক-সহ ঘরে তালা বন্ধ করে রাখা হয়।

বর্ধমান-কালনা রোডের ধারের ওই স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের মাঠে প্রচুর মানুষ জড়ো হয়েছেন। একদল গ্রামবাসী বন্ধ তালা ভেঙে ওই শিক্ষককে মারধর করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। রয়েছেন কয়েকজন অভিভাবিকাও। ইতিমধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ওই শিক্ষককে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকে জনতা। পুলিশ অবশ্য ওই শিক্ষককে ভ্যানে ঢুকিয়ে থানায় নিয়ে যায়।

Advertisement

তারপরেও অবশ্য গ্রামবাসীদের ক্ষোভ কমেনি। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে স্থানীয় বাসিন্দা তপন কোলে বলেন, “কিছুদিন ধরে স্কুলের অভিভাবকদের মধ্যে ওই শিক্ষকের সম্পর্কে একটি চাপা অসন্তোষ দানা বাঁধে। কিন্তু ছাত্রীদের বয়স কম হওয়ায় অভিভাবকদের কাছে খোলাখুলি ঘটনার কথা জানাতে পারেনি তারা।” আর এক বাসিন্দা রমারানি বাগ বলেন, “স্কুলে ছেলেমেয়েদের শিক্ষা নিতে পাঠিয়েছি। সেখানে শিক্ষকেরাই এমন নোংরা আচরণ করেন ভাবতেই পারিনি।”

ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীর মা বলেন, “আমি বর্ধমানের শহরের বাড়ি-বাড়ি পরিচারিকার কাজ করে খুব কষ্টে মেয়েকে লেখাপড়া শেখাচ্ছি। সোমবার থেকে মেয়ে স্কুলে যেতে চাইছে না। এ দিন জোর করে জিজ্ঞেস করায় সমস্ত ঘটনার কথা জানায়।” তাঁর দাবি, ওই শিক্ষক ছাত্রীটিকে দু’হাতে খাতা ধরে পড়তে বলে সেই অছিলায় অশালীন আচরণ করতেন।

ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা তনুশ্রী সামন্তের দাবি, “ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। বুধবার স্কুলে এসে শুনতে পাই এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের সঙ্গে কথা না বলে আমি কোনও মন্তব্য করতে পারব না।”

জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “এ দিন ওই স্কুলে জনা ৩০ অভিভাবক গিয়েছিলেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, বাংলার ওই শিক্ষক, শান্তনু দাস একাধিক দিন ষষ্ঠ ও পঞ্চম শ্রেণির তিন ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেছেন। অশ্লীল কথাও বলেছেন। গ্রামবাসীরা শিক্ষককে একটি ঘরে আটকে রেখেছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই শিক্ষককে থানায় নিয়ে এসেছে। পরে রাতে অভিভাবকদের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন