শহরের খেদ মেটাতে হবে নেচার পার্ক

এনার্জি পার্ক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খোলার কোনও সম্ভাবনা কার্যত নেই। বন আইনের বিধানে হরিণ চলে যাওয়ার পরে উঠে গিয়েছে ডিয়ার পার্কও। দুর্গাপুর শহরের অভিজাত এলাকা সিটি সেন্টারের বুকে দু’টি সরকারি পার্ক উঠে গিয়েছে গত কয়েক বছরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:০৬
Share:

এনার্জি পার্ক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খোলার কোনও সম্ভাবনা কার্যত নেই। বন আইনের বিধানে হরিণ চলে যাওয়ার পরে উঠে গিয়েছে ডিয়ার পার্কও। দুর্গাপুর শহরের অভিজাত এলাকা সিটি সেন্টারের বুকে দু’টি সরকারি পার্ক উঠে গিয়েছে গত কয়েক বছরে।

Advertisement

এ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই শহরবাসীর। তবে এ বার সেই খেদ মেটাতে ‘নেচার পার্ক’ গড়ার উদ্যোগ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) চেয়ারম্যান নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়।

এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিটি সেন্টারের ডিয়ার পার্কটি এক সময় প্রকৃতিপ্রেমীদের অন্যতম প্রধান গন্তব্য ছিল দুর্গাপুরে। ডিয়ার পার্ক দেখভালের দায়িত্বে ছিল এডিডিএ। এক সময় দেড়শোরও বেশি হরিণ ছিল সেখানে। কিন্তু ২০০৬ সালে কেন্দ্রীয় জু অথরিটি জানিয়ে দেয়, হরিণ রাখার মতো উপযুক্ত পরিকাঠামো এই পার্কের নেই। এর পরেই পার্ক থেকে হরিণ নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় বাঁকুড়ার সুতানের জঙ্গলে। পরের দিকে পার্কের দেওয়াল, লোহার গেট ভেঙে নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। কার্যত খণ্ডহর হয়ে পড়ে রয়েছে সেটি।

Advertisement

প্রকৃতিপ্রেমী এবং বিজ্ঞান পিপাষুদের জন্য এক সময়ে অবশ্য গন্তব্য ছিল সিটি সেন্টারের ‘সায়েন্স অ্যান্ড এনার্জি পার্ক’। রাজ্যের অচিরাচরিত শক্তি দফতর (ওয়েবরেডা) দুর্গাপুরে ২০০৩ সালে পার্কটি চালু করে। নানা রকম মডেল ছিল পার্কে। সৌরশক্তি, জলবিদ্যুৎ, স্থিরতড়িৎ সংক্রান্ত বিভিন্ন মডেলে হাতেকলমে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা দেখানোর ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু পার্কের মডেল ও পরিকাঠামোর উন্নতি না হওয়ায় দর্শনার্থীদের কাছে পার্কের গুরুত্ব এক সময় কমতে শুরু করে। ২০০৯ সালের শেষ দিকে পাকাপাকি বন্ধ হয়ে যায় পার্কটি। আগাছা ও জঙ্গলে ভরে গিয়েছে পার্কটি। এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্ক খোলার জন্য আগ্রহী সংস্থার কাছ থেকে প্রস্তাব চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাড়া মেলেনি।

এডিডিএ-এর চেয়ারম্যান নিখিলবাবু জানান, ডিয়ার পার্ক নতুন করে খোলার অনুমোদন মেলেনি। এনার্জি পার্ক খোলার সম্ভাবনাও বিশ বাঁও জলে। শহরের বাসিন্দাদের চাহিদার কথা ভেবে তাই এডিডিএ সিটি সেন্টারের ক্ষুদিরাম সরণির ধারে ৬ একর জায়গায় ‘নেচার পার্ক’ গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে আগ্রহী সংস্থার কাছ থেকে প্রস্তাব চাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”

এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাস্তার ধারে দু’দিকে বড় বড় গাছ রয়েছে। প্রকল্প এলাকার মধ্যে গাছগুলি রেখে দেওয়া হবে। থাকবে জগার্স ট্র্যাক, স্কেটিং রিং, সুইমিং পুল ইত্যাদি। এ ছাড়া পাখিরালয় এবং অ্যাকোয়ারিয়াম রাখা হবে। ব্যাটারি চালিত গাড়ির সাহায্যে দর্শনার্থীরা পার্ক ঘুরিয়ে দেখানোর ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া পার্কের ভিতরে পার্টি লন, ক্যাফেটেরিয়া, ফুড কোর্ট-সহ নানা ধরনের আধুনিক পরিষেবার ব্যবস্থা থাকবে।

নিখিলবাবু বলেন, “সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব ভাবে গড়ে তোলা হবে পার্কটি। বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করা হবে। ছাদ, কার্নিসে বিশেষ উদ্ভিদের আস্তরণ গড়ে তাপরহিত করে তোলা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন