লোকসভা ভোটের সাফল্য প্রশ্নের মুখে পড়েছে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই। পুরভোটে মুখ থুবড়ে পড়েছে দল। সামনে আবার বিধানসভা ভোট। সংগঠনে কিছু রদবদল করে আসানসোলে সেই ভোটের জন্য ঝাঁপানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিল বিজেপি। সেই লক্ষ্যে আসানসোল ও দুর্গাপুরের পুরনো কমিটি ভেঙে ফেলা হয়েছে ইতিমধ্যে। আজ, মঙ্গলবার আসানসোলে আসছেন বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর সঙ্গে বিশদে আলোচনার পরে নতুন কমিটি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে।
আসানসোল শিল্পাঞ্চলে দলের সংগঠন দেখভালের অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার। তিনি জানান, দুর্গাপুরে যে পৃথক কমিটি তৈরি হয়েছিল তার বিলুপ্তি ঘটিয়ে দুর্গাপুরকেও আসানসোল জেলার মধ্যে জুড়ে নেওয়া হয়েছে। কারণ, সংগঠন বাড়াতে দুর্গাপুরে আলাদা কমিটি তৈরি করা হলেও তা বিশেষ ফলপ্রসূ হয়নি। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন কমিটি এখনও তৈরি না হলেও নতুন জেলা সভাপতি হিসেবে তাপস রায়কে বেছে নেওয়া হয়েছে।
সুভাষবাবু জানান, শিল্পাঞ্চলের চরিত্র বিচার-বিশ্লেষণ করেই নতুন কমিটি তৈরি করা হচ্ছে। নতুন সভাপতি তাপসবাবু নিজে এক জন খনিকর্মী। প্রায় ৩৩ বছর ধরে বিজেপি প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন বিএমএসের নানা দায়িত্বে ছিলেন। এই অঞ্চলে সংগঠিত ও অসংগঠিত ক্ষেত্রে শিল্প-শ্রমিকদের আধিক্য বেশি। নিচু স্তর থেকে শ্রমিক-কর্মীদের সঙ্গে তাপসবাবুর কাজ করার অভিজ্ঞতা কাজে আসবে বলে বিজেপি নেতৃত্বের ধারণা।
তাপসবাবুর সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ১৯৯২ সালে তিনি সঙ্ঘ পরিবারে যোগ দেন। পরের বছর তাঁকে বিজেপির যুব মোর্চার বর্ধমান জেলা সাধারণ সম্পাদক পদে বসানো হয়। পরে বিএমএসের নানা পদে ছিলেন। এর আগে ছিলেন দলের আসানসোল জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে। দলের সাংসদের প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করেন তিনি। তাপসবাবু বলেন, ‘‘সঙ্ঘ ও দলীয় নেতৃত্বের মতামত নিয়ে এই শিল্পঞ্চলে সংগঠন বাড়ানোর কাজ করে যাব।’’
বিজেপি-র একটি সূত্রের দাবি, পুরভোটে ভরাডুবির পরে নেতৃত্বে কিছু বদলের দাবি উঠছিল দলের একটি অংশ থেকে। দলের অন্দরে যাতে কোনও ক্ষোভ দানা না বাঁধে এবং বিধানসভা ভোটে সমস্ত শক্তি নিয়ে লড়াইয়ে নামা যায়, এই দু’দিকে নজর রেখেই সংগঠনে রদবদল করা হয়েছে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, মঙ্গলবার আসানসোলে আসছেন সাংসদ বাবুল। নানা সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি তিনি কয়েকটি দলীয় বৈঠকও করবেন। ব্লক ও জেলা স্তরের কমিটিগুলিতে কাদের রাখা হবে, সে নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে বলে দলের স্থানীয় নেতারা জানান।
যদিও বিজেপি-র এই রদবদলকে আমল দিতে নারাজ শাসকদল। তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসনের বক্তব্য, ‘‘এই শিল্পাঞ্চলের মানুষ ওদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। আর কেউ ভুলেও ঘুরে তাকাবেন না।’’