সিন্ডিকেটের সুতোয় জুড়ে গেল কলকাতা ঘেঁষা রাজারহাট নিউটাউন আর আসানসোলের জামুড়িয়া।
সিন্ডিকেটের ঝামেলা নিয়ে শনিবার নিউটাউন যখন অশান্ত, ঘটনাচক্রে একই দিনে জামুড়িয়ার বিজয়নগরে একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানার সামনে কাজিয়ায় জড়িয়ে পড়ল তৃণমূল অনুগামী দু’টি গোষ্ঠী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট ওই স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করে। এ দিন সকালে প্রায় শ’দুয়েক লোক কারখানার দরজা আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। কারখানার মাল আসা-যাওয়ার পাঁচটি গাড়ি আটকানো হয়। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সিন্ডিকেটে খাতায় কলমে শ’খানেক সদস্য থাকলেও তাঁদের মধ্যে জনা বিশেক সব নিয়ন্ত্রণ করেন। সিন্ডিকেট ব্যবস্থা বন্ধ করে স্থানীয়দের কাছ থেকে নির্মাণ সামগ্রী কিনতে হবে বলেও তাঁরা দাবি তোলেন।
এই সময়েই তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত অসংগঠিত শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁদের অনেকেই সিন্ডিকেটের সদস্য। দুই গোষ্ঠী মুখোমুখি হওয়ার পরেই বচসা বেধে যায়। শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের অভিযোগ, কারখানার বাইরে তাদের অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ চলার পরে পুলিশের বড় বাহিনী চলে আসে। জামুড়িয়ার বিডিও এসে দুই গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। আগামী ১৩ জুন ব্লক অফিসে দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে।
তৃণমূল নেতারা অবশ্য দলেরই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলার কথা মানতে নারাজ। দলের জামুড়িয়া ২ ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য তাপস চক্রবর্তীর দাবি, “বিজেপির নেতৃত্বে আমাদের ইউনিয়ন অফিসে ভাঙচুর চালানো হয়। কয়েক জন নিগৃহীত হয়েছেন। এতে সিপিএমেরও ইন্ধন রয়েছে।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির বর্ধমান জেলা সভাপতি নির্মল কর্মকার পাল্টা বলেন, “ওই গ্রামে আমাদের কোনও সংগঠনই নেই। যা শাসকদলই ওই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটেছে, সেটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। সিন্ডিকেটে থেকেও যারা কিছু পাচ্ছে না, তাদেরই রোষের মুুখে পড়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।”
স্পঞ্জ আয়রন কারখানার কর্তা সুমিত চক্রবর্তী বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। যাঁরা আমাদের নূন্যতম বাজারদরে নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করবেন, আমরা তাদের থেকেই জিনিস নেব। এটা আমরা বিক্ষোভকারীদের পরিষ্কার বলে দিয়েছি।”