সাফাই হয় না, দুর্গন্ধে টেকা মুশকিল চকবাজারে

বাজারে ঢোকার মুখেই জমে রয়েছে আর্বজনা। নিয়মিত সাফাইয়ের অভাবে উপচে গিয়েছে নিকাশি নালা। এই অবস্থাতেই নিত্য বিকিকিনি চলছে কালনা শহরের চকবাজারে। ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বার বার প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানানোর পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কালনা মহকুমার সবথেকে বড় বাজার হল চকবাজার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৪ ০১:২৬
Share:

এই খোলা ভ্যাট থেকে দুগর্ন্ধ ছড়ায় কালনার চকবাজারে।—নিজস্ব চিত্র।

বাজারে ঢোকার মুখেই জমে রয়েছে আর্বজনা। নিয়মিত সাফাইয়ের অভাবে উপচে গিয়েছে নিকাশি নালা। এই অবস্থাতেই নিত্য বিকিকিনি চলছে কালনা শহরের চকবাজারে। ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বার বার প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানানোর পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

Advertisement

কালনা মহকুমার সবথেকে বড় বাজার হল চকবাজার। পুরনো এই বাজার এলাকার মধ্যে রয়েছে খুচরো ও পাইকারী দু’ধরণের বাজার। বাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, রয়েছেন প্রায় শ’পাঁচেক দোকানদার। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নোংরা পরিবেশই বাধা হয়ে দাঁড়ায় রোজ দিনের কেনাকাটায়। সব থেকে খারাপ অবস্থা ৪ নম্বর ওয়ার্ড সংলগ্ন বাজারের কাছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রায় এক দশক আগে আবর্জনা ফেলার জন্য বাজারের পূর্ব দিকে একটি ডাস্টবিন তৈরি করা হয়েছিল। সেই ডাস্টবিনে বাজারের মাছের আঁশ, কাটা মুরগির নাড়িভুঁড়ি-সহ বাজারের প্রচুর নষ্ট সব্জি ফেলা হয়। একই সঙ্গে শহরের বিভিন্ন ভোজবাড়ির উচ্ছিষ্টও ফেলা হয় এখানে। কিন্তু নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় ডাস্টবিনের মধ্যেই পচে যায় বেশির ভাগ জিনিস। অভিযোগ, পুরসভার সাফাই কর্মীদের উপর এই ডাস্টবিনের ময়লা নিয়মিত পরিষ্কারের কথা থাকলেও সেটিও হয় না। আবার যখন পরিষ্কার করা হয়, তখন সতকর্তার অভাবে গাড়ি থেকে পড়তে পড়তে যায়। ফলে সমস্যা বাড়ে। চকবাজার এলাকার ব্যবসায়ী গৌতম নন্দী, মুরারী ধর, সনাতন সাহা, বাপ্পা পালেদের অভিযোগ, মাঝেমধ্যে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে সাধারণ মানুষ দুর্গন্ধের কারণে বাজারেই আসতে চায় না। ফলে লোকসান হয় ব্যবসায়ীদের।

বাজারটির দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে কালনা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি। ব্যবসায়ীদের একটি মহলের অভিযোগ, এই সমিতি বাজার থেকে টোল আদায় করলেও বাজারের পরিষেবার দিকে নজর দেয় না। শুধু আবর্জনাই নয়, এলাকার কয়েক হাজার মানুষ চকবাজারের উপর নির্ভরশীল হলেও এখানে ব্যবস্থা নেই পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। কয়েক বছর আগে একটি শৌচাগার তৈরি হলেও প্রয়োজনীয় জলের যোগানের অভাবে সেটি এখনও ব্যবহার করাই যায়নি। বাজারের নিকাশি নালার হালও বেশ খারাপ। ভেঙে গিয়েছে বেশ কয়েকটি টিনের শেড। ঘিঞ্জি এই বাজারে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।

Advertisement

বাজারের পরিকাঠামোগত সমস্যার কথা স্বীকার করে কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান তথা কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বলেন, “বাজারের পরিকাঠামোয় সমস্যা থাকলেও এই বিষয়টি আমরা দেখি না। তবে সাফাইয়ের কাজ আমরাই করি। আর্বজনা ফেলার জায়গার অভাবের কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। সেই সমস্যা মিটে গিয়েছে।” তাঁর আশ্বাস, শীঘ্রই চকবাজারের ময়লা তোলার সমস্যা মিটে যাবে।

চকবাজারের ব্যবসায়ীদের অভিযোগপত্র পাওবার কথা স্বীকার করে কালনার মহকুমা শাসক তথা কালনা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির চেয়ারম্যান সব্যসাচী ঘোষ বলেন, “সমস্যাটি নিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলব।” মহকুমা শাসকের দাবি, চকবাজারের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ২০ লক্ষের বেশি অর্থের একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই কাজ শুরু হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন