কিছুদিন আগেই সরকারি কর্মচারি সংগঠনগুলিকে এক ছাতার তলায় আনতে ‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারি ফেডারেশন’ নামে একটি সংগঠনের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁরাই রাজ্যের আর একটি সংগঠন ‘পঞ্চায়েতি রাজ এমপ্লয়িজ ফেডারেশন (পশ্চিমবঙ্গ)’-এর সম্মেলনকে বেআইনি ও নিয়ম বহির্ভূত বলে দাবি করলেন শুক্রবার। যদিও জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু জানান, আজ, শনিবার ওই সম্মেলনে বেশ কয়েক জন মন্ত্রীর হাজির থাকার কথা। তাঁরা নিয়ম ভেঙে কোনও সভায় হাজির হবেন না বলেও তাঁর দাবি। এ দিকে, দু’দলের আকচা-আকচিতে বিতর্ক ছড়িয়েছে প্রশাসনের কর্মচারিদের মধ্যেও।
আজ, শনিবার বর্ধমান লোক সংস্কৃতি মঞ্চে ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জী-সহ মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, স্বপন দেবনাথ, মলয় ঘটক ছাড়াও বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু, বিধায়ক ও রাজ্য সরকারি কর্মচারি ফেডারেশনের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি, ফেডারেশনের রাজ্য নেতা সুব্রত চাকি, মানস বন্দ্যোপাধ্যায়, ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ধূর্জটি বিজয় মাঝির থাকার কথা। শহর জুড়ে ফ্লেক্স টাঙিয়ে তা প্রচার করাও হয়েছে। তার আগে এ দিন রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক ডেকে রাজ্য সরকারি কর্মচারি ফেডারেশনের এক নেতা, জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত দাবি করেন, মৃগেন মাইতির গোষ্ঠীর কিছু লোক পুরোনো সংগঠনের নামে বর্ধমানে যে রাজ্য সম্মেলন বর্ধমানে দু’দিন ধরে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা বেআইনি। কারণ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা সরকারি কর্মচারি ফেডারেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে লেখা চিঠিতে জানানো হয়েছে, রাজ্য কোর কমিটির সভায় একটি মাত্র ফেডারেশনের কথাই বলা হয়েছে। তাঁর আরও দাবি, এখন রাজ্য জুড়ে সদস্য সংগ্রহের কাজ চলছে। বিধানসভা নির্বাচনের পরে নির্বাচনের মাধ্যমে রাজ্য কমিটি গড়া হবে। তার আগে কোনও সম্মেলন করা যাবে না বলে তাঁদের জানানো হয়েছিল বলেও তাঁর দাবি। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত দফতরের সদস্যদের নিয়ে অন্য গোষ্ঠী কীভাবে রাজ্য সম্মেলন করছে এবং ওই সম্মেলনে মন্ত্রীরাই বা কীভাবে আসছেন, সে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সাতটি সংগঠন মুচলেকা দিয়ে পুরোনো সংগঠনের অস্তিত্ব বিলোপ করেছে। তাঁদের দাবি, এমনটা চললে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখা দেবে। ফেডারেশনের ঐক্য বিঘ্নিত হবে। পঞ্চায়েত মন্ত্রী থেকে শুরু করে অন্য মন্ত্রীদের এ দিনের সম্মেলনে না আসার অনুরোধ করে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও জ্যোতিপ্রকাশবাবুর দাবি।
যদিও পঞ্চায়েতি রাজ এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের নেতা ধূর্জটি বিজয় মাঝির দাবি, ‘‘জ্যোতিপ্রকাশবাবুরা সরকারি কর্মচারি ফেডারেশনের আইন জানেন না। পঞ্চায়েত কর্মচারিরা সরকারি কর্মচারি নয় এটা তাদের জানা উচিত। সম্মেলন নিয়ে শোরগোল করার কিছু নেই।’’