অবশেষে কর্মবিরতি তোলার সিদ্ধান্ত নিলেন দুর্গাপুর আদালতের আইনজীবীরা। মঙ্গলবার থেকে তাঁরা আদালতের কাজে যোগ দেবেন বলে বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে। সোমবার দুর্গাপুর আদালতে আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার ও বর্ধমান জেলা জজ। এর পরেই কর্মবিরতি তোলার সিদ্ধান্ত হয় বলে আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে। এর আগে দুর্গাপুরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ও আইনজীবীদের কর্মবিরতি তোলার আবেদন জানিয়েছিলেন।
সোমবার দুর্গাপুর আদালতে আসেন হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার শুভাশিস দাশগুপ্ত ও বর্ধমানের জেলা জজ পবনকুমার মণ্ডল। বার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, তাঁরা আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে জানান, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা ভেবে কর্মবিরতি তোলা প্রয়োজন। শেষ পর্যন্ত তাঁদের কথা মেনে নেন আইনজীবীরা। বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারককে বদলির যে দাবি তাঁরা করেছিলেন, তা থেকে আপাতত সরার পরামর্শ দিয়েছেন রেজিস্ট্রার।
দুর্গাপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবীদাস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই কর্মবিরতির ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছিল। অনেক মানুষ কাজের জন্য এসেও ফিরে গিয়েছেন। সে কারণেই কর্মবিরতি তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার থেকে সমস্ত আইনজীবী কাজে যোগ দেবেন। দেবীদাসবাবু বলেন, “ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারকের বদলির বিষয়ে যে দাবি ছিল, সে নিয়ে পরে আমরা আলোচনায় বসব। আপাতত সব দাবি তুলে নিয়ে আদালতের কাজ করা হবে।”
গত ৫ ডিসেম্বর বিকেলে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে একটি বধূ নির্যাতনের মামলা চলার সময় থেকে গোলমালের সূত্রপাত। আইনজীবীদের অভিযোগ, সওয়াল-জবাব চলার সময়ে আসন থেকে উঠে পড়েন বিচারক। মামলা শেষ করার অনুরোধ করলেও তিনি শোনেননি। এর পরেই আইনজীবীরা ওই বিচারক-সহ আদালতের অন্য বিচারকদের বেশ কিছু ক্ষণ আটকে বিক্ষোভ দেখান। ওই ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারককে বদলি করার দাবিতে ৬ ডিসেম্বর থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন আইনজীবীরা।
গত বৃহস্পতিবার শহরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় কর্মবিরতি তোলার আবেদন জানিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। কিন্তু তাতে ফল হয়নি। তখন বার অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছিল, ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মবিরতির কথা আগেই ঘোষণা করা হয়েছে। অনেক আইনজীবী এখন বাইরে থাকায় ওই তারিখের আগে কর্মবিরতি তোলা যাবে না। কিন্তু, সোমবার হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার ও জেলা জজ এসে বৈঠক করার পরে মঙ্গলবার থেকেই কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আইনজীবীরা।