জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কের বেহাল অংশ সংস্কার করার পাশাপাশি ওই সড়ক সম্প্রসারণ করে দু’লেনের করার উদ্যোগ করেছে পূর্ত দফতর। রাস্তার কাজের জন্য রাজ্য সরকার ৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দও করেছে। পূর্ত দফতরের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার (পশ্চিমাঞ্চল ১) সৌমিত্র সেন বলেন, “ওই রাস্তার জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছে। তিনটে ঠিকাদার সংস্থা দরপত্র জমা দিয়েছে। দরপত্রগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান থেকে কাটোয়া ওই রাস্তাটির বর্ধমান থেকে নর্জা মোড় পর্যন্ত অংশ খাতায় কলমে ৭ নম্বর রাজ্য সড়ক। আবার কাটোয়া থেকে বলগনা পর্যন্ত ওই রাস্তা ১৪ নম্বর রাজ্য সড়ক বলে পরিচিত। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত ওই রাস্তাটি সাড়ে তিন মিটার চওড়া ছিল। পরে অবশ্য তা সম্প্রসারণ করে সাড়ে পাঁচ মিটার করা হয়। যদিও মঙ্গলকোটের নিগন ও পোষলা বাসস্টপের মাঝে ওই রাস্তা ৪.৮ মিটার চওড়া। এলাকাবাসীরা জানান, কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে ওই রাস্তায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বেশিরভাগ জায়গায় পিচের প্রলেপ উঠে গিয়ে ছোট-বড় খন্দ দেখা দিয়েছে। পূর্ত দফতর জানায়, এ সব সংস্কার করে রাস্তাটি দু লেনের (সাড়ে সাত মিটার চওড়া) করা হবে। ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে এই রাস্তাটিকে সংস্কার করে দু’লেন করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রকল্প জমা দিয়েছিল পূর্ত দফতর। চলতি বছরে রাজ্য সরকারের অর্থ দফতর এই রাস্তার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা বরাদ্দ করে। ওই রাস্তা দিয়ে বর্ধমান-কাটোয়া, কৃষ্ণনগর-বর্ধমান, বহরমপুর-বর্ধমান ও বোলপুর-বর্ধমান রুটের শতাধিক বাস চলাচল করে। এছাড়াও বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের মালবাহী গাড়ি নিয়মিত যাতায়াত করে। বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ জেলার সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তা।
নিত্যযাত্রী ও বাসমালিকদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, ওই সড়কটি সম্প্রসারিত করে দুই লেনের করা হোক। তাহলে যানজট হবে না। আবার কোনও গাড়িকে পাশ কাটাতে গেলে পিচ রাস্তা থেকে মাটিতেও নামতে হবে না। বর্ধমান জেলা বাস মালিক সমিতির নেতা নারায়ণচন্দ্র সেনের দাবি, সামনের গাড়িকে পাশ দিতে রাস্তার ধারে মাটিতে গাড়ি নামাতে হয়। মাটি থেকে গাড়িকে ফের রাস্তার উপর তোলার সময় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। অনেক পথচারীও দুর্ঘটনার কবলে পড়েন সেই সময়। তবে রাস্তা চওড়া হওয়ায় খবরে আশার আলো দেখছেন তাঁরা সবাই।
পূর্ত দফতরের কাটোয়া চক্রের এক বাস্তুকার বলেন, “বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কের উপর চাপ প্রচন্ড। প্রতিদিন দেড়-দু’হাজারের উপর গাড়ি ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে।” তাঁর দাবি, “কাটোয়ায় প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সময় ওই রাস্তার উপর চাপ আরও বাড়বে। তার আগে এই রাজ্য সড়ক দু’লেনের হওয়া প্রয়োজন ছিল।”