ধোপদুরস্ত পোশাক না পরলেই হনুমানের থাপ্পড়!

পোশাক-আশাকের ব্যাপারে আপনি কি ক্যাজুয়াল। তেমন ভাবে ধোপদুরস্ত পোশাক পরার কথা ভাবেন না? ব্যারাকপুরে বিশেষ করে মোহনপুরে যাওয়ার আগে অন্তত এক বার ভাবুন! কেন না ধোপদুরস্ত পোশাক না পরে মলিন জামাকাপড় পরা থাকলেই জুটছে চড়-থাপ্পড়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৪:০৭
Share:

পোশাক-আশাকের ব্যাপারে আপনি কি ক্যাজুয়াল। তেমন ভাবে ধোপদুরস্ত পোশাক পরার কথা ভাবেন না?

Advertisement

ব্যারাকপুরে বিশেষ করে মোহনপুরে যাওয়ার আগে অন্তত এক বার ভাবুন!

কেন না ধোপদুরস্ত পোশাক না পরে মলিন জামাকাপড় পরা থাকলেই জুটছে চড়-থাপ্পড়।

Advertisement

কে মারছে চড়-থাপ্পড়?
না তারা কোনও দুষ্কৃতী নয়। আট-ন’জনের হনুমানের একটি দলের জেরেই এখন ত্রাহি ত্রাহি রব টিটাগর থানার মোহনপুরে। অবস্থা এমনই দাঁড়িয়েছে যে, ঘটনার প্রতিবাদে আধ ঘণ্টা ব্যারাকপুর-বারাসাত রোড অবরোধও করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

কী অভিযোগ হনুমান বাহিনীর বিরুদ্ধে?

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মাস চারেক আগে এলাকায় আস্তানা গড়ে হনুমানগুলো। প্রথম প্রথম সব ঠিকঠাকই চলছিল। শান্ত ভাবেই থাকত তারা। আচমকা মাস তিনেক আগে থাকতে হঠাত্ই বদল ঘটে তাদের আচরণে। অভিযোগ, মলিন পোশাক না পরা থাকলেই চড়াও হত হনুমানগুলো। তাদের হাত থেকে বাঁচেনি পরিচারিকা, স্থানীয় কারখানার শ্রমিকরা। বাদ যায়নি স্কুল পড়ুয়ারাও।


চলছে অবরোধ।—নিজস্ব চিত্র।

কখনও পিছন থেকে চুল ধরে টানা। গায়ের উপর লাফিয়ে পড়ে চড় মারা। কখনও আবার ব্যাগ ধরে টানাটানি। চলছিল সবই। বেশি প্রতিবাদ করলে কামড়ে দিতেও পিছপা হয়নি হনুমানগুলো।

বার বার মার খেতে খেতে বিরক্ত বাসিন্দারা ঠিক করেন এ বার পাল্টা মার দিতে হবে। লাঠি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হতে শুরু করেন তাঁরা।

এখানেও অবশ্য মানুষকে হারিয়ে দেয় হনুমানরা। লাঠির বদলে তারা হাতে তুলে নেয় গাছের ডাল। ‘হনুমানদের একবারও লাঠির ঘা না দিতে পারলেও উল্টে তাদের ডালের আঘাতেই জখম হয়েছেন বেশ কয়েক জন।’—এমনই বলছেন এলাকার বাসিন্দারা। চিকিত্সার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে গেলেও শান্তি নেই। প্রয়োজনীয় প্রতিষেধক ঠিকমত পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ। বাইরে থেকে বেশি দামে ওষুধ কিনতে হয়। তাই পুরো ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করেন বাসিন্দারা। অবরোধের জেরে নাকাল হতে হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী। বন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলা হবে পুলিশের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়। তার পরই অবরোধ ওঠে। ব্যারাকপুরের মহাকুমাশাসক পীযুষ গোস্বামী বলেন, “বন দফতরকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আহতদের চিকিত্সার ব্যবস্থাটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, নগরায়নের জেরে ব্যারাকপুরে দ্রুত কমছে গাছপালা। খাদ্যের প্রয়োজনে জনবসতিতে এসে আশ্রয় নিচ্ছে হনুমানগুলো। তার জেরেই মানুষ এবং পশুদের মধ্যে বিরোধ লাগছে। যাঁরা ধোপদুরস্ত পোশাক পরে যানবাহনে করে যাতায়াত করছে তাঁদের অসুবিধে হচ্ছে না। তাঁদেরকে কোনও আঘাত করছে না অসুবিধায় পড়ছে পথচারী এবং নিম্ন-আয়ের মানুষ জন। হনুমানদের কেন এমন আচরণ তার অবশ্য ব্যাখ্যা নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন