মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেখে শক্তি পাই, বলে বিতর্কে হাসনাবাদের বিডিও

সরকারি আধিকারিকের এমন মুখ্যমন্ত্রী-স্তুতির নজির অবশ্য নতুন নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৫০
Share:

ত্রাণ বিলির অনুষ্ঠানে বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় (মাঝে)। —নিজস্ব চিত্র

স্বামী বিবেকানন্দের সামনে দাঁড়ালে তিনি শক্তি পান। আর শক্তি পান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে।

Advertisement

ঘুর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এ ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি ত্রাণ বিলির এক অনুষ্ঠানে এমন কথা বলায় হাসনাবাদের বিডিও-র ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলল বিরোধীরা। বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই যে এখানে মাননীয়ার (মুখ্যমন্ত্রী) ছবি দেখছেন, যদি রোজ সকালে দু’মিনিট ছবির সামনে আপনারা দাঁড়ান, একটা অদ্ভুত শক্তি পাবেন। আমি নিজে দাঁড়াই দুটো ছবির সামনে।’’ আর এই পথেই ত্রাণ নিতে আসা সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ হতে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘তা হলে একটা অদ্ভুত শক্তিতে নিজেকে রিচার্জ করা যায়।’’ বিডিও’র এই বক্তৃতা সামনে আসার পর থেকেই সরব হয়েছে বিরোধীরা।

সরকারি আধিকারিকের এমন মুখ্যমন্ত্রী-স্তুতির নজির অবশ্য নতুন নয়। বাম জমানায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার তুষার তালুকদার এক বার তাঁর দফতরে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর ছবি রাখা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় মুখ্যমন্ত্রীকে ‘মনীষী’ আখ্যা দিয়েছিলেন। তাঁর সেই মন্তব্য নিয়েও বিতর্ক হয়েছিল বিস্তর।

Advertisement

আরও পড়ুন: রাজ্যের সব জেলে কয়েদিদের খাবার কিনতে হবে ক্যাশলেস কার্ডে!

বসিরহাট মহকুমার মুরারিশায় ত্রাণ বিলির অনুষ্ঠানেই অরিন্দমবাবু জানান, তাঁর কাছে আর ত্রাণসামগ্রী রাখার জায়গা নেই। ত্রাণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগের কথা বোঝাতে তিনি বলেন, ‘‘আর্ত, দরিদ্র মানুষ এখনও চাইছে। দিদির কাছে সে রকমই খবর আছে। কার ঘাড়ে ক’টা মাথা আছে, যদি আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষ পায়নি, মানুষকে দাও। আমরা শুধুমাত্র তাঁর নির্দেশ পালন করছি।’’ এমনকি, সাংবাদিকদেরও পরামর্শ দিয়ে ওই সরকারি আধিকারিক বলেন, ‘‘কাজ করার জন্য এনার্জি দরকার। আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এক জন কর্মবীর। আপনারা তাঁর ছবির সামনে দাঁড়ালে কর্মের অনুপ্রেরণা পাবেন।’’

বিজেপির মহকুমা সভাপতি গণেশ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘ত্রাণ দেওয়া নিয়েও তৃণমূলের সঙ্গে রাজনীতিতে হাত মিলিয়েছেন এক জন সরকারি আধিকারিক। নিরপেক্ষতার বালাই নেই। এর থেকে লজ্জা আর কী হতে পারে!’’ সিপিএম নেতা শ্রীদীপ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘বিডিও ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা মেরুদণ্ডহীনতার প্রকাশ। কী ভাবে প্রশাসন চলছে, তা এর থেকেই স্পষ্ট হচ্ছে।’’

বিডিও-র পাশাপাশি ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলার কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল নেতা ফিরোজ কামাল গাজী। বিডিওর মন্তব্য প্রসঙ্গে ফিরোজ বলেন, ‘‘কী বলবেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত অনুভূতির বিষয়। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দলমত নির্বিশেষে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি ক্ষতিপূরণ দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন