প্রীতি ও শুভেচ্ছা বিনিময় হল। জলযোগ এবং মিষ্টিমুখ হল। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগও হল। কিন্তু রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে কোনও আশ্বাস মিলল না! শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বরং পরামর্শ দিলেন আরও ধৈর্য রাখার!
শাসক দলের অনুমোদিত ‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারি ফেডারেশনে’র প্রীতি সম্মিলনীতে রাজ্যের এক ঝাঁক মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে সোমবার সন্ধ্যায় ওই অনুষ্ঠানে প্রত্যাশিত ভাবেই ডিএ-প্রসঙ্গ তুলেছিলেন উদ্যোক্তারা। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা এখন যে হারে ডিএ পান, রাজ্য সরকারি কর্মীরা তার চেয়ে ৪৯% পিছিয়ে। এই পিছিয়ে থাকাকেই কর্মচারী মহলে ‘ডিএ বকেয়া’ হিসাবে ধরা হয়। প্রীতি সম্মিলনীর আসর দাবি জানানোর উপযুক্ত জায়গা নয় মেনে নিয়েও এ দিন ফেডারেশনের অন্যতম আহ্বায়ক দিব্যেন্দু রায় বলেন, “কাজের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারই প্রথম কথা। কিন্তু আমাদের ৪৯% ডিএ বাকি আছে। আবার বিগত সরকার দু’লক্ষ কোটি টাকা ঋণের বোঝা চাপিয়ে গিয়েছে, এটাও অস্বীকার করার নেই।” এই ব্যাপারে পার্থবাবুর কাছ থেকে নির্দিষ্ট আশ্বাস তাঁরা প্রত্যাশা করছেন বলেও জানান ফেডারেশনের নেতৃত্ব।
তৃণমূলের তরফে সরকারি কর্মচারীদের একাধিক সংগঠনকে এক ছাতার তলায় আনার কাজ করেছেন দলের মহাসচিব পার্থবাবুই। তিনি এ দিন বলেন, “আরও একটু ধৈর্য ধরুন! আপনাদের ডিএ-র টাকা তো কেউ কেটে নিয়ে যাচ্ছে না! ডিএ ফ্রিজ করেও দেয়নি সরকার।” কর্মচারী সংগঠনের দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস অবশ্য দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশিই, দফতর ছুটির পরে সন্ধ্যায় এমন অনুষ্ঠান আয়োজন করায় কর্মসংস্কৃতির প্রশংসা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, ফিরহাদ হাকিম, মুখ্য সরকারি সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, শ্রমিক নেতা প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন বক্তা। কেউই ডিএ নিয়ে আশ্বাসের পথে যাননি। শোভনদেববাবু আবার বোঝাতে চেয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে জঙ্গলমহলের মানুষ যে দু’বেলা খেতে পাচ্ছেন, তাকেই ‘অনেক বড় পাওয়া’ হিসাবে দেখুন সরকারী কর্মীরা। নেতা-মন্ত্রীদের এমন ভাষণে কর্মচারীদের একাংশের বিরক্তি অবশ্য টের পাওয়া গিয়েছে অনুষ্ঠান-স্থলেই!