সংস্কার হবে এই ঝিলেরও। এখানে হবে বিনোদন পার্ক। দীপঙ্কর মজুমদারের তোলা ছবি।
পচা ডোবায় উঠে আসবে একখণ্ড উত্তর মেরু। আর্বজনা ভরা ঝিল হবে বিনোদন পার্ক!
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবান্ন আসা-যাওয়ার পথে হাওড়ার দিকে বিদ্যাসাগর সেতুর দু’পাশে এমনই দু’টি জলাশয়কে এ ভাবে বদলে ফেলার পরিকল্পনা করেছে হাওড়া পুরসভা। উদ্দেশ্য, শহরের সৌন্দর্যায়ন।
সম্প্রতি বিদ্যাসাগর সেতুর দু’পাশে গাছ লাগিয়েছে রাজ্য বন দফতর। এ বার হাওড়া পুরসভা সেতুর নীচে সৌন্দর্যায়নে উদ্যোগী হওয়ায় নবান্নে যাওয়া-আসার পথের ছবি অনেকটাই বদলে যাবে বলে মনে করছেন পুরকর্তারা।
রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক কার্যালয় নবান্নে উঠে আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী হাওড়া শহরের সামগ্রিক উন্নয়ন চেয়েছিলেন। সেই মতো তৃণমূল হাওড়া পুরসভায় ক্ষমতায় আসার পরে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে একের পর এক পরিকল্পনা নেয়। রাস্তাঘাট মেরামত, অলিগলিতে আলো লাগিয়ে শহরের রূপ বদলে ফেলা হয়েছে অনেকটাই। উন্নত হয়েছে নিকাশি ও পানীয় জলের ব্যবস্থা। নবান্ন চত্বর ও হাওড়ার প্রশাসনিক এলাকাকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে রিং রোড।
পুরসভা সূত্রে খবর, সৌন্দর্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই ফোরশোর রোড, ডিউক রোড, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে, ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের দু’পাশ ভরিয়ে দেওয়া হয়েছে হাইমাস্ট ও ত্রিফলা আলোয়। কিন্তু রিং রোডের পাশে শালিমার রেল ইয়ার্ডের কাছে একটি ঝিল এবং নবান্ন থেকে কলকাতার দিকে যাওয়ার পথে টোল প্লাজার কাছে একটি আবর্জনায় ভরা ছোট্ট ডোবা এই সামগ্রিক পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিচ্ছিল বলে মত পুরকর্তাদের। তাই এই দু’টি জলাশয়কে আমূল বদলে ফেলার পরিকল্পনা করা হয়।
মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শহর জুড়ে আমরা যে আড়াইশো নতুন পার্ক তৈরি করেছি, শিক্ষণীয় করে তুলতে সেগুলির প্রত্যেকটিকে আলাদা থিম দেওয়া হচ্ছে।’’ মেয়র জানান, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে যে ডোবাটিকে ঘিরে সৌন্দর্যায়নের চিন্তা করা হয়েছে, সেটিও যাতে শিক্ষামূলক হয়ে ওঠে, তার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পটির অন্যতম উদ্যোক্তা, ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা নবান্ন ডেভেলপমেন্ট জোনের চেয়ারম্যান সৈকত চৌধুরী বলেন, ‘‘ডোবাটিকে গড়ে তোলা হবে উত্তর মেরুর একটুকরো সংস্করণ হিসাবে। থাকবে পাহাড়, বরফ, পেঙ্গুইন, শ্বেত ভালুকের ফাইবার মডেল। রাতে থাকবে আলোর খেলা।’’
পুরসভা সূত্রে খবর, চিরতুষার অঞ্চলে থাকা উদ্ভিদ ও প্রাণী বৈচিত্রের সবটাই ফুটিয়ে তোলা হবে এই পার্কে। এ ছাড়া, শালিমারের কাছে ডিউক রোডের পাশের ঝিলটি সংস্কার করে তার চারপাশ আলোয় মুড়ে দেওয়া হবে। থাকবে বোটিংয়ের ব্যবস্থা। ঝিলের মাঝে থাকবে বড় বড় ফোয়ারা, লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের ব্যবস্থা। সৈকতবাবু জানান, ঝিলের ধারে বসে এই আলো আর শব্দের খেলা উপভোগ করতে গ্যালারি তৈরির কথাও ভাবা হচ্ছে।