লৌহকপাটের আড়ালে তাঁদের থাকতে হয় নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত। সেই বন্দিদের তৈরি লোহার বেঞ্চে বসে এ বার পড়াশোনা করবে স্কুলপড়ুয়ারা।
কেন্দ্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন রাজ্যের একটি স্কুলে শ্রেণিকক্ষ তৈরি করে দেওয়ার জন্য সম্প্রতি অর্থ বরাদ্দ করেছে। সেই সব শ্রেণিকক্ষের জন্য লোহার বেঞ্চ তৈরি করে দেবেন মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলের বন্দিরা। কারা দফতর সূত্রের খবর, ওই বেঞ্চ তৈরি করার জন্য ইতিমধ্যেই মেদিনীপুর জেলে ওয়েল্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে।
কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে ওয়েল্ডিং মেশিন আছে অনেক আগে থেকেই। সেখানে লোহার আলমারি ও খাট ইত্যাদি তৈরি করেন বন্দিরা। সেই সব আলমারি জেলের অফিসেই ব্যবহার করা হয় আর খাট পাঠানো হয় সেপাইদের ব্যারাকে। কারাগারে বাণিজ্যিক ভাবে ওয়েল্ডিং মেশিনে জিনিসপত্র তৈরির কাজ এই প্রথম শুরু হচ্ছে। মেদিনীপুর জেলের এক অফিসার বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে ৬০টি বেঞ্চ তৈরির বরাত দিয়েছে পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন। আরও বরাতের আশ্বাস দিয়েছে তারা।’’
ওই অফিসার জানান, লোহার বেঞ্চ বাজার থেকে কিনতে গেলে প্রতিটির দাম পড়ে প্রায় ছ’হাজার টাকা। জেলে তৈরি লোহার বেঞ্চের দাম থাকবে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে। মোট ছ’জন বন্দি এই কাজে যুক্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এক জন ছাড়া বাকিদের কেউই এই কাজ জানতেন না। বন্দিদের প্রশিক্ষণ দিতে বাইরের তিন জন প্রশিক্ষক নিয়মিত আসছেন।
পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন বন্দিদের তৈরি লোহার বেঞ্চ কিনতে উদ্যোগী হয়েছে কেন? ওই সংস্থার এক কর্তা জানান, মাইথনের একটি স্কুলে শ্রেণিকক্ষ তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। সেই জন্যই প্রাথমিক
ভাবে বন্দিদের তৈরি ৬০টি লোহার বেঞ্চ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ‘‘আমরা সারা দেশেই ‘কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি’ প্রকল্পে এমন কাজ করে থাকি। অন্যান্য রাজ্যেও এই ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কারা দফতরকে,’’ বললেন ওই কর্তা।