পুলিশ কেন বাড়িতে! অভিযোগ কালীঘাটে

তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্যামাপ্রসাদের সঙ্গে এলাকারই বাসিন্দা, দলের জেলা যুব সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের আকচা-আকচি দীর্ঘদিনের।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৮
Share:

দিন তিনেক আগে তাঁর খোঁজ করতে পুলিশ গিয়েছিল বাড়িতে।

Advertisement

আর তাতেই রীতিমতো ‘অপদস্থ’ হয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হলেন বলাগড়ের তৃণমূল ব্লক সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবারই তিনি কালীঘাটে মমতার বাড়িতে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন।

শ্যামাপ্রসাদের ক্ষোভ, ‘‘আমি বাড়ি না-থাকায় পুলিশ আমার ৮৪ বছরের অসুস্থ মাকে বলে আসে, ধনেখালিতে গিয়ে ছেলেকে দেখা করতে বলবেন। না হলে ফল ভাল হবে না।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘বাম আমলেও পুলিশ কখনও বাড়িতে যায়নি। এ বার দলের ছেলেদের কাছে মুখ দেখাব কী করে?’’

Advertisement

তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্যামাপ্রসাদের সঙ্গে এলাকারই বাসিন্দা, দলের জেলা যুব সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের আকচা-আকচি দীর্ঘদিনের। ওই ব্লকে পঞ্চায়েতের টিকিট কারা পাবেন, তা নিয়েও চাপান-উতোর চলছে দু’পক্ষের। সম্প্রতি ধনেখালির দলীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী অসীমা পাত্রের বাড়িতে এ নিয়ে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত এবং বলাগড়ের দলীয় পর্যবেক্ষক তথা বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল এবং শান্তনু ছিলেন। কিন্তু শ্যামাপ্রসাদ যাননি। এর পরেই বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর বাড়িতে পুলিশ হানা দেয়।

পুলিশ যে ওই বাড়িতে গিয়েছিল তা মেনে নিয়েছেন জেলা পুলিশের এক কর্তা। তবে, হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘ওঁকে তো গ্রেফতার বা আটক করতে পুলিশ যায়নি। সরকারি লোকজন ওঁর খোঁজ পাচ্ছিলেন না। তাঁদের অনুরোধেই পুলিশ খোঁজ করতে গিয়েছিল।’’

শ্যামাপ্রসাদের বাড়িতে পুলিশ পাঠানোর প্রসঙ্গে বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল বলেন, ‘‘শ্যামাবাবুকে কয়েকদিন ধরে খোঁজা হচ্ছিল। উনি ভোটের কাজের সময় তিন দিন ধরে মোবাইল বন্ধ করে বসে ছিলেন। আমি, অসীমা কেউ ওঁর সঙ্গে কথা বলতে পারছিলাম না। তাই খোঁজ করতে পাঠানো হয়েছিল।’’ অসীমা ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপ-এরও কোনও জবাব দেননি।

কেন তিনি ফোন বন্ধ রেখেছিলেন? শ্যামাপ্রসাদের জবাব, ‘‘যে ভাবে টিকিট চেয়ে ঘন ঘন ফোন আসছে, তাতে ফোন বন্ধ রেখে একটু স্বস্তি পাচ্ছি।’’ তবে তাঁকে এ ভাবে ‘বিরক্ত’ করার জন্য তিনি দুষেছেন দলের জেলা যুব সভাপতি শান্তনুকেই। তাঁর কথায়, ‘‘যুব সভাপতি এলাকায় ঘোঁট পাকাচ্ছেন। আমি আর বিধায়ক আলোচনা করে সব ঠিক করেছি। জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস তা অনুমোদনও করেছেন। তাই আমার উপরে ওঁদের রাগ। কালীঘাটে গিয়ে বিষয়টা জানিয়ে এসেছি। আমাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।’’

শ্যামাপ্রসাদের অভিযোগ মানেননি শান্তনু। তাঁর দাবি, ‘‘এখানে গতবারের জয়ী ৩০ জন এ বার টিকিট পাননি। এটা আমাদের দলের নিয়মের মধ্যে পড়ে না। এ নিয়ে অসীমাদিরা আলোচনায় ডাকলেও শ্যামাবাবু সেখানে যাননি। তবে ওঁর বাড়িতে পুলিশ পাঠানোর ব্যাপারে একেবারেই আমার কোনও হাত নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন