ফাইল চিত্র।
ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তায় যে দিকেই তাকানো যাবে, সে দিকেই দেখা যাবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের। আদালতে রাজ্য সরকারের জমা দেওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, দু’টি ক্ষেত্র ছাড়া সব ক’টিতেই নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে ব্যবহার হবে সিভিক ভলান্টিয়াররা।
আদালতে জমা দেওয়া রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতিটি বুথেই সশস্ত্র পুলিশের সঙ্গে লাঠিধারী হিসাবে থাকবে সিভিক ভলান্টিয়ার। পাশাপাশি, সেক্টর অফিস, টহলদারি ভ্যান (আরটি মোবাইল), কুইক রেসপন্স টিম, থানা ও মহকুমা শাসকের স্ট্রাইকিং ফোর্সেও থাকবে সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। ভোটের সময়ে থানাতেও কর্তব্যরত হিসাবে দেখা যাবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের। ভোটের সরঞ্জাম বণ্টন কেন্দ্রেও (ডিসি ও আরসি) সিভিক ভলান্টিয়ারদের রাখার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের। শুধুমাত্র হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড (এইচআরএফএস) এবং স্ট্রং রুমে তাদের রাখা হচ্ছে না।
ভোটে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ‘দেদার’ ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, সিভিক ভলান্টিয়ারেরা কখনই পুলিশ বাহিনীর অর্ন্তভুক্ত নয়। কী ভাবে তারা পুলিশের বাহিনী হিসাবে কাজ করবে? দ্বিতীয়ত, লাঠি ব্যবহারের কোনও অধিকার সিভিক ভলান্টিয়ারদের নেই। তার পরেও কী ভাবে তাদের লাঠিধারী বলে সরকার সিলমোহর দিচ্ছে! এমনকি, সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগের কোনও নির্দিষ্ট পদ্ধতিও নেই। কার্যত শাসকদলের বিধায়ক-কাউন্সিলর-নেতাদের সুপারিশেই তাদের নিয়োগ হয় বলে বিরোধীদের অভিযোগ। ফলে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।
প্রশাসনের একাংশের মতে, সিভিক ভলান্টিয়ারদের নির্দিষ্ট কোনও প্রশিক্ষণ নেই। ফলে লাঠি কী ভাবে ব্যবহার করতে হয়, সেটাই জানে না তারা। তারা কর্তব্যে কোনও গাফিলতি করলে সরাসরি শাস্তিরও কোনও বিধান নেই। কিন্তু পুলিশকর্মীরা সরকারের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। এক প্রশাসনিক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়ারদের হাতে ক্ষমতা বেশি দিলে কী হয়, জানুয়ারিতে মধ্যমগ্রামে তা দেখা গিয়েছিল।’’
সূত্রের খবর, নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে সিভিক ভলান্টিয়ারের ব্যবহার নিয়ে আপত্তি তুলেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশনও। কারণ, সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু সেই আপত্তি উড়িয়ে তাদের দিয়েই পঞ্চায়েত ভোট করাতে মরিয়া রাজ্য সরকার।