ফাইল চিত্র।
আইনি লড়াইয়ে পঞ্চায়েত ভোট আটকে থাকায় রাজ্যে উন্নয়নের কাজ থমকে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এর জন্য দায়ী করেছেন বিরোধীদেরই। তাঁর অভিযোগ, বিরোধীরা ভোটে যেতে না চেয়ে গোটা প্রক্রিয়াকে দেরি করাচ্ছে। বিরোধীদের অবশ্য পাল্টা যুক্তি, ‘উন্নয়নে’র চাপে ঠিকমতো মনোনয়নই জমা দেওয়া যায়নি! রাজ্য প্রশাসন এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে বিহিত মিলছে না বলেই ‘সুবিচার’ চাইতে আদালতে যেতে হয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ পঞ্চায়েত মামলা আবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে পাঠিয়ে দেওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী সোমবার বলেন, ‘‘আদালতের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না। প্রশাসনিক ক্যালেন্ডার দেখে তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। সব পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ ভাবে হয়ে গিয়েছে। মনোনয়ন হয়ে গিয়েছে। সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি জগাই-মাধাই-বিদাই! তোমরা সত্যি মানুষকে বিশ্বাস করলে ভোটে যাচ্ছ না কেন? ইচ্ছা করে দেরি করছ রাজনৈতিক প্রশ্ন তুলে?’’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, নির্বাচনী আচরণবিধি জারি থাকায় নতুন কোনও প্রকল্প করা যাচ্ছে না। মমতার কথায়, ‘‘একটা অনিশ্চিত অবস্থা!’’
শাসক দলের আশঙ্কা, আইনি লড়াইয়ের জেরে ভোটের তারিখ পিছিয়ে যেতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ৮ থেকে ১৩ মে’র মধ্যে গরম পড়ে যায়। তার পরে কালবৈশাখী এবং বর্ষাকাল আসে। রমজান মাসে ভোটে অসুবিধা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘সব কিছু ভেবেচিন্তে করতে (ভোটের নির্ঘণ্ট) হয়েছে। সন্ত্রাসের নাটক করছ! ৫৮ হাজার বুথে মনোনয়ন চলাকালীন সাতটি ঘটনা ঘটেছে। ব্যক্তিগত ভাবে, আইনজীবী হিসাবে আদালতের প্রতি সম্মান রেখে বলছি, আদালতের আগেই সংবাদমাধ্যম বিচার করে ফেলছে!’’
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত: হস্তক্ষেপে নারাজ ডিভিশন বেঞ্চ, নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিতই
বিরোধীরা অবশ্যই মমতার সঙ্গে একমত নয়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের তর সইছিল না। সিঙ্গল বেঞ্চে নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই তারা ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে পুনর্মূষিক ভব!’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের মতে, ‘‘এই সরকারের আমলে কোনও গণতান্ত্রিক অধিকারই সুরক্ষিত নয়। তার জন্য আদালত ও রাস্তায়, সর্বত্র লড়াই করতে হবে।’’ বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর কটাক্ষ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সেই উন্নয়নের কথা বলছেন তো, যারা কাপড়ে মুখ ঢেকে ঘুরছে, বোমা-গুলি নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে? ঠিক! এই উন্নয়ন একটু ব্যাহত হল বইকী!’’