রমজান মোল্লা
ভোট নিয়ে গ্রামে দু’গোষ্ঠীর বিবাদে এক পক্ষের হয়ে কথা বলায় এক প্রৌঢ়কে বোমা মেরে খুন করার অভিযোগ উঠল। শনিবার সকালে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের ভূমশোড় গ্রামের ঘটনা। নিহত রমজান মোল্লা ওরফে ভকত (৫৮) পেশায় গরুর পাইকারি ব্যবসায়ী। খুনের প্রত্যক্ষদর্শী বলে দাবি করেছেন এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত বাপন মোল্লা। তিনি এ বারের ভোটে ভূমশোড় গ্রামের এক সংসদে তৃণমূলের এক মহিলা প্রার্থীর স্বামী-সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান থানায়। পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল জানান, তিন জনকে ধরা হয়েছে। তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মানতে নারাজ।
শাসক দল সূত্রের খবর, ভূমশোড় গ্রামে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী রয়েছে। এক পক্ষে রয়েছেন বাপন মোল্লা। তিনি ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ মানগোবিন্দ অধিকারীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। অন্য শিবির প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক বনমালী হাজরা ঘনিষ্ঠ। বনমালীর সমর্থকেরা এ বার গ্রামের দু’টি সংসদেই প্রার্থী দেন। একটি সংসদে বাপনদের পক্ষের আবিদা সুলতানা মনোনয়নপত্র জমা দেন। কে দলের প্রতীক পাবেন, তা নিয়ে শুক্রবার দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বৈঠক হলেও সমস্যা মেটেনি। আবিদার স্বামী রাজীব মণ্ডলের দাবি, ‘‘প্রার্থী তুলতে চাপ দিচ্ছিল অন্য গোষ্ঠী। রমজান চাচা তার প্রতিবাদ করেছিলেন।”
বাপন মোল্লার দাবি, এ দিন সকালে সাড়ে ৬টা নাগাদ গাড়ি নিয়ে তিনি ভাতার বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। তালপুকুরের কাছে তাঁর গাড়ি আটকায় দলের অন্য শিবিরের কয়েকজন। দাবি করে, আবিদাকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হবে। রেশনের জিনিসপত্র নিয়ে সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন রমজান। গন্ডগোল থামাতে অনুরোধ করেন তিনি। বাপনের অভিযোগ, ‘‘তখনই চাচাকে তিনটে বোমা মারা হয়। একটা বোমা মাথায় লাগে। সেখানেই উনি মারা যান।’’ খাইরুল আলমের অভিযোগ, “আমরা তৃণমূল করি। তার পরেও বাবাকে খুন করা হল!’’
নিহতের পরিবারের সঙ্গে থানায় দেখা করেন মানগোবিন্দবাবু। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে এই খুন কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষই যা বলার বলবেন।’’ পক্ষান্তরে, বনমালীবাবুর বক্তব্য, ‘‘কে, কী বলছে, তার জবাব দেব না। ঘটনাটি দুঃখজনক।” তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের দাবি, ‘‘দুষ্কৃতীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’’