যন্ত্রণায় ককিয়ে উঠতেই মাথায় ঘা

লাঠির ডগায় জড়ানো শাসক দলের পতাকা। সব মিলিয়ে শ’দেড়েক। ওদেরই এক জন শাসানির সুরে বলল, ‘ছবি তুলবি না একদম’। কান দিইনি।

Advertisement

সব্যসাচী ইসলাম

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৫৮
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

রামপুরহাট শহরে এসডিও অফিসের সামনে লাঠিধারীদের বাধার মুখে পড়েছে এসইউসির মিছিল, সে ছবিই তুলছিলাম সোমবার দুপুরে।

Advertisement

লাঠির ডগায় জড়ানো শাসক দলের পতাকা। সব মিলিয়ে শ’দেড়েক। ওদেরই এক জন শাসানির সুরে বলল, ‘ছবি তুলবি না একদম’। কান দিইনি।

এসইউসি-র এক মহিলা নেত্রীকে ঘিরে ধরেছিল কয়েক জন। ক্যামেরা হাতে সে দিকে এগোতেই এক জন বলল, ‘আমাদের ছবি তুলছে, মার ওকে।’ পর ক্ষণেই মাথার পিছন দিকে ভারী কিছু দিয়ে কেউ জোরে বাড়ি মারল। যন্ত্রণায় ককিয়ে উঠতেই ফের ঘা পড়ল প্রায় একই জায়গায়। মাথায় হাত দিতে, ভিজল রক্তে।

Advertisement

অন্য হাতে ছিল ক্যামেরা। কাঁধের ব্যাগে আরও একটা ক্যামেরা। তত ক্ষণে ঘিরে ধরেছে পনেরো-ষোলো জন। লোহার পাইপ, লাঠি, উইকেট হাতে। শুরু হল এলোপাথাড়ি মার। কাঁধ, পিঠ, কোমরে।

ক্যামেরার ব্যাগটা কে যেন টেনে নিল। মারমুখী ভিড়ের মধ্যে থেকে আমাকে কোনও ভাবে বার করলেন এসইউসির এক জন। আমার সঙ্গে থাকা সংবাদকর্মী অক্ষয় ধীবরও তখন রক্তাক্ত। কিন্তু থামেনি কিল-চড়-ঘুসি-লাথি। প্রাণ বাঁচাতে ছুটলাম একটা গলির দিকে। পিছনে তাড়া করল লাঠি-বাহিনী। কোনও ভাবে পৌঁছলাম রামপুরহাট থানার সামনে। সেখানে পৌঁছতে রক্ষে।

সোমবার সকাল থেকেই এসডিও অফিসের সামনে ছিল পুলিশ পাহারা। কিন্তু পুলিশি ব্যারিকেডের বাইরে দাপাচ্ছিল লাঠি-বাহিনী। দুপুরে ওই অফিসের দিকে এসইউসির মিছিল এগোতেই তেড়ে এল তারা।

বিকেলে আমাকে ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে। ডাক্তার বলেছেন, এক দিন থাকতে হবে সেখানে। বিছানায় শুয়ে একটাই আওয়াজ ভাসছে কানে, ‘মার ওকে’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন