সন্ত্রাস নিয়ে জরুরি রিপোর্ট তলব প্রধানমন্ত্রীর।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাস নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য বা টুইট করেননি। কিন্তু সূত্রের খবর, আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সন্ত্রাস কেন হয়েছে তা জানতে নির্দেশ দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবকে রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছ থেকে রিপোর্ট নিতে বলেছেন রাজনাথ। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী নিজেও উদ্বিগ্ন হয়ে রিপোর্ট পাঠাচ্ছেন | তিনিও রাজ্য প্রশাসনের কাছ থেকে সব তথ্য জানতে চাইবেন|
বিজেপি সূত্রে খবর, এ দিন দিল্লিতে বিজেপির দলীয় বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে আলাদা আলোচনা হয়। পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাস নিয়ে একটি রিপোর্ট দেন পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এ দিনের ঘটনা দেখে মোদী এবং অমিত শাহ মমতা সম্পৰ্কে দ্বিমুখী রণকৌশল নিচ্ছেন। এক দিকে মোদী রাজ্য সরকারের সঙ্গে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে কোনও প্রত্যক্ষ সংঘাতে যেতে চাইছেন না। ২৫ মে প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় গেলে শেখ হাসিনা ও মমতার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে| রাজ্য বিজেপি এ নিয়ে খুব খুশি না হলেও প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানোর নির্দেশ দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে।
তাই মোদী সরকার প্রশাসন এবং রাজনীতিকে আপাতত আলাদা রাখতে চাইছে। মমতা বিজেপি বিরোধিতা করলেও কেন্দ্রের ডাকা বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। মোদীও রাজ্য-বিরোধী অবস্থান নিচ্ছেন না।
অন্য দিকে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ রাজ্য বিজেপিকে সন্ত্রাস-বিরোধী রাজনীতি করার সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন| শুধু রাজ্য স্তরে নয়, দিল্লিতেও বিজেপি পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাস নিয়ে এখন লাগাতার প্রচার করবে। রাজ্য বিজেপিকে বলা হচ্ছে, হিংসা ও মৃত্যুকে একটা বড় প্রচারের হাতিয়ার করা হোক| বিজেপি রাজ্যপালের কাছে যাক। নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়া যায় কি না সেটাও দিল্লি দেখছে |
আবার আজ বিজেপি নেতারা প্রতিক্রিয়া দিলেও কোনও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মমতা-বিরোধী বিবৃতি দেননি। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী তাঁর কাজ করবেন| প্রশাসনিক কাজের জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একশো বার বৈঠক করতে পারেন। কিন্তু দলের সভাপতি হিসেবে আমার কাজ গণতন্ত্রের এই হত্যাকে সামনে রেখে মমতা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা।’’ তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি সভাপতির বক্তব্য. ‘‘আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত চাই। কিন্তু সিবিআই তাদের তদন্ত তাদের মতো করছে। তদন্ত লঘু করার কোনো রাজনৈতিক কারণ তো নেই!’’
বিজেপি সূত্রে খবর, রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার কোনও পরিকল্পনাও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে নেই। কিন্তু রাজ্যের উপরে চাপ বাড়াবে বিজেপি। রাজনাথ বলেন. ‘‘রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট চাওয়া মানে কিন্তু কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ নয়।’’
মোদীর ঘনিষ্ঠ শিবিরের মতে. ২০১৯ সালে তাঁর প্রধান লক্ষ্য রাহুল গাঁধী। কোনও আঞ্চলিক নেতাকে আক্রমণকে অগ্রাধিকার না দিয়ে বরং কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁদের ঝগড়া বাড়ানোই হল কৌশল।