পুরস্কৃত পঞ্চায়েতে আছেন বিরোধীরাও।
রাজ্য জুড়ে যখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় বাধার অভিযোগ তুলছে বিরোধীরা, তখন ব্যতিক্রম পূর্ব বর্ধমানের কালনা ২ ব্লকের বৈদ্যপুর। শাসক-বিরোধী, সব পক্ষেরই দাবি, ভোট-ময়দানে হোক বা উন্নয়নের কাজে, এই পঞ্চায়েতে সবাই রয়েছেন পাশাপাশি। সম্প্রতি প্রকল্প তৈরি, তার রূপায়ণ এবং টাকা খরচের দক্ষতার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পুরস্কারও পেয়েছে এই পঞ্চায়েত।
এই পঞ্চায়েতের বাসিন্দারাই জানান, বৈদ্যপুরে উন্নয়ন হয়েছে। আর শাসকদেলর দাবি, এ আসল উন্নয়ন। রাস্তায় ‘দাঁড়িয়ে থাকা’ উন্নয়ন নয়। ২০১৩-র ভোটে এই পঞ্চায়েতের ১৩টি আসনের ন’টিতে তৃণমূল, চারটিতে সিপিএম জেতে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ বার বিজেপি ১০টি, তৃণমূল এবং সিপিএম ১৩টি আসনেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। এলাকার বিজেপি নেতা ধনঞ্জয় হালদার, সিপিএম নেতা মহম্মদ আলিরা বলেন, ‘‘চাপ একেবারে নেই, বলব না। কিন্তু, প্রার্থী না দেওয়ার মতো সন্ত্রাস এখানে নেই।’’ তৃণমূল নেতৃত্ব জানান, সন্ত্রাস তো দূরঅস্ত, এখানে শাসক-বিরোধী সকলেই পাশাপাশি কাজ করেছে।
কী কাজ? সুভাষবাবু বলেন, ‘‘শিশুশিক্ষাকেন্দ্র, অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রগুলির অবস্থা, শৌচাগার কত তৈরি হয়েছে, এমনই ৩০টি বিষয়ে তথ্য জানতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। পঞ্চায়েতে অন্তত ৩৪টি সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে। তৈরি হয়েছে বহু রাস্তা। সাহায্য করা হয়েছে স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলিকে। সব কাজেই পাশে ছিলেন বিরোধীরা।’’ ধনঞ্জয়বাবুর সুরেই পঞ্চায়েতের বিদায়ী সিপিএম সদস্য কার্তিক ক্ষেত্রপাল, আর্জিনা বেগম বলেন, ‘‘সবাই এক সঙ্গে কাজ করব, এটাই তো স্বাভাবিক।’’ তবে শুধু এই পঞ্চায়েতই নয়, কালনা ২ ব্লকেই বিরোধীরা প্রায় সব আসনেই মনোনয়ন দিতে পেরেছে। সেই প্রসঙ্গে তুলতেই তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রণব রায় বলছেন, ‘‘বিরোধীরা থাকবেন, এটাই গণতন্ত্রের নিয়ম।’’