Panchayat Poll 2018

সন্ত্রাসের বলি তারাই, ভোটের আগে নিহত ৭, দাবি শাসক দলের

তৃণমূল শিবিরের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত শাসনে সইফার রহমান, বসিরহাটে আমিরুল মল্লিক, ঘোকসাডাঙায় বাবলু সরকার, সিউড়িতে দিলদার খান, গোপালনগরে অজিত দেবনাথ, মালদার রঘুনাথপুরে নয়ন মণ্ডল এবং সাগরদিঘিতে কাজিরুল বিশ্বাস— এই সাত জনের মৃত্যু হয়েছে বিরোধীদের হামলায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ১০:১৮
Share:

তৃণমূল শিবিরের বক্তব্য, বিরোধীদের হামলায় এখনও পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে।

ভোটের আগে এখনও পর্যন্ত খুন হয়েছেন তৃণমূলের সাত জন স্থানীয় নেতা-কর্মী। এই পরিসংখ্যান দেখিয়ে শাসক দলের দাবি, প্রাক-নির্বাচনী হিংসার সব চেয়ে ভুক্তভোগী তারাই। নেতারা বলছেন, তাঁদের দলেরই সাত জন নিহত অথচ বিরোধীরা হিংসার অভিযোগ নিয়ে হইচই করছে!

Advertisement

তৃণমূল শিবিরের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত শাসনে সইফার রহমান, বসিরহাটে আমিরুল মল্লিক, ঘোকসাডাঙায় বাবলু সরকার, সিউড়িতে দিলদার খান, গোপালনগরে অজিত দেবনাথ, মালদার রঘুনাথপুরে নয়ন মণ্ডল এবং সাগরদিঘিতে কাজিরুল বিশ্বাস— এই সাত জনের মৃত্যু হয়েছে বিরোধীদের হামলায়। তৃণমূলের দেওয়া এই সংখ্যাকে অস্বীকার করছেন না বিরোধী শিবিরের কেউ। কিন্তু তাঁদের পাল্টা প্রশ্ন, শাসক দলই বলছে বিরোধীদের লোক নেই বলে তারা পঞ্চায়েতে প্রার্থী দিতে পারছে না। মন্ত্রীরা বলছেন, টেলিভিশন আর আদালতে ছাড়া কোথাও বিরোধীদের অস্তিত্ব নেই। তা হলে আর বিরোধীরা কী ভাবে শাসক দলের কর্মীদের খুন করবে? বিরোধীদের বরং পাল্টা দাবি, তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বেরই শিকার সাত।

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘বিরোধীরা সন্ত্রাসের অভিযোগ করছে। কিন্তু বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা থেকে রাজ্যকে বাঁচাতে গিয়ে আমাদের কর্মীরাই খুন হয়েছেন বেশি। সন্ত্রাসের শিকার তো আমরাই!’’ বিরোধীরা তো বলছে অন্তর্দ্বন্দ্ব? পার্থবাবু বলছেন, ‘‘কোথায় অন্তর্দ্বন্দ্ব? কোথাও কোথাও বিরোধীরাই তৃণমূলের পতাকা নিয়ে হামলা করছে। যাতে দোষ পড়ে তৃণমূলের ঘাড়ে!’’ দু’দিন আগে দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে দরবার করেও বিরোধীদের সন্ত্রাসের অভিযোগ জানিয়ে এসেছে তৃণমূল সাংসদদের প্রতিনিধিদল।

Advertisement

ভোটের আগে প্রথম প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। সেই জেলার তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, বিজেপি, বাম ও কংগ্রেস হাত মিলিয়ে শাসক দলকে আক্রমণ করছে। রাজ্যের আর এক মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘‘মালদহে কংগ্রেস-সিপিএম মিলে হামলা করেছে। মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে আমাদের কর্মীকে খুন করেছে কংগ্রেস।’’ মুর্শিদাবাদে তো জেলা পরিষদও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। শুভেন্দুবাবুর মতে, ‘‘প্রতিরোধের ক্ষমতা নেই। রাতের অন্ধকারে হামলা চালাচ্ছে।’’ যা শুনে বহরমপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করে লাভ নেই! গোটা রাজ্য দেখছে তৃণমূলের নিজেদের মধ্যে লড়াই এখন কোন জায়গায়।’’

বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ অবশ্য দাবি করছেন, তাঁদেরও সাত জন মারা গিয়েছেন। পুলিশে অভিযোগও হয়েছে। খোঁজ নেই ৩৮ জন বিজেপি কর্মীর। রাহুলবাবুর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল জনরায় নিতে ভয় পাচ্ছে। গুন্ডাদের মাধ্যমে জিততে চাইছে।’’ বামেদের অভিযোগ, তৃণমূলের হামলায় নদিয়ায় মারা গিয়েছেন তাদের কর্মী দুলাল মণ্ডল। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলছেন, ‘‘তৃণমূলের দাবি, ওদেরই এত লোক মারা গিয়েছেন। ঠিকই। তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বলছি, মানুষের জোট ছাড়া আপনাদেরও রক্ষা করার কেউ নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন